আফগানিস্তানের পাককিতা ও খোস্ত প্রদেশে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর পেরিয়ে গেছে তিন দিনেরও বেশি সময়। ভূমিকম্পের পর গতকাল শুক্রবার ওই অঞ্চলে ৪ দশমিক ৩ মাত্রার একটি আফটার শক ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়ে সাড়ে ১১ শ’র বেশি। কিন্তু এখনো উল্লেখযোগ্য কোনো বিদেশি সহায়তা পৌঁছায়নি দেশটিতে।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত শুক্রবারের আফটার শক ভূমিকম্পটি ঠিক আগের জায়গায়ই আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, এই আফটার শক ভূমিকম্পেও অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এখনো আফটার শক ভূমিকম্পের ফলে ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের পরিমাণ নিরূপণ করা যায়নি।
আফগানিস্তানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে মারা যাওয়া লোকদের বাইরেও অন্তত ২ হাজার জন আহত হয়েছেন। অন্তত ১০ হাজার ঘরবাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে।
ওই মুখপাত্র আরও বলেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে পর্যাপ্ত ওষুধ নেই। এই ভয়াবহ বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে আমাদের প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং অন্যান্য সহায়তা সামগ্রী প্রয়োজন।
ভূমিকম্পের উপকেন্দ্রটি পার্বত্য অঞ্চলে হওয়ায় এবং সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা দুর্বল হওয়ায় সহায়তা নিয়ে যাওয়া দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। এই ভূমিকম্প দেশটির ক্ষমতায় থাকা তালেবান সরকারের জন্য একটি ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ হিসেবে হাজির হয়েছে। তারা বৈদেশিক সহায়তা আনতে কতটা সক্ষম হবে তা-ই এখন দেখার বিষয়।
তবে এরই মধ্যে ভারত ও পাকিস্তান থেকে কিছু সহায়তাসামগ্রী আফগানিস্তানে পৌঁছেছে। গত বৃহস্পতিবার জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত জানিয়েছে, তারা আফগানিস্তানে সহায়তা পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, তারা এরই মধ্যে বেশ কিছু সহায়তাসামগ্রীসহ বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছে।
ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র শাবিয়া মান্টো গত শুক্রবার রয়টার্সকে বলেছেন, বিগত কয়েক দশকের দ্বন্দ্ব-সংঘাত এবং অস্থিতিশীলতা আফগানিস্তানের কয়েক কোটি মানুষকে ক্ষুধা এ দুর্ভিক্ষের মধ্যে ফেলে রেখে গেছে।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পকবলিত এলাকায় কলেরা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর আগে গত মে মাস নাগাদ দেশটির প্রায় ৫ লাখ মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হয়েছিল।