নড়াইলের লোহাগড়ায় ফেসবুক পোস্টে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও নড়াইল–২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা।
আজ শনিবার তাঁর ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে মাশরাফি বলেছেন, ‘গতকাল আমাদের এলাকায় এমন একটি ঘটনা ঘটেছে, যা আমাকে ভীষণভাবে মর্মাহত করেছে এবং প্রতিটি মুহূর্তে পোড়াচ্ছে।’
মাশরাফি বলেছেন, ‘ছেলেবেলা থেকে যে নড়াইলকে দেখে এসেছি, যে নড়াইলকে নিয়ে আমরা গর্ব করি, সেই নড়াইলের সঙ্গে এই নড়াইলকে আমি মেলাতে পারছি না।’
দীর্ঘ এ পোস্টে তিনি এ ঘটনার পর সবার সহনশীল আচরণ প্রত্যাশা করেছেন।
লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া এলাকার এক কলেজছাত্র গতকাল শুক্রবার বিকেলে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–কে কটূক্তি করে তাঁর ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় স্থানীয় বিক্ষুব্ধ লোকজন দিঘলিয়া বাজারে সংখ্যালঘুদের বাড়ি ও দোকানপাটে হামলা চালায়। এ সময় একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ একপর্যায়ে শটগান দিয়ে ফাঁকা গুলি করে।
মাশরাফি তাঁর পোস্টে লিখেছেন, ‘সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি, এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা নষ্ট হয়, এমন কাজ করা থেকে দয়া করে বিরত থাকুন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের ফাঁদে পড়ে নড়াইলের হাজার বছরের ঐতিহ্য আর সম্প্রীতির বন্ধনকে একনিমেষে ম্লান করে দেবেন না।’
মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেছেন, ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম। আজীবন শান্তি ও সম্প্রীতির দূত ছিলেন আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। অজ্ঞতা থেকে হোক কিংবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে, কেউ যদি মহানবী (সা.)–কে নিয়ে কটূক্তি করে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। কেউ যদি সত্যিই এমনটি করে থাকে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই তার বিচার হবে।’