দেশে সাম্প্রতিক সময়ে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, দেশের চারদিকে তাকালে মনে হয় দেশটা আফগানিস্তান হয়ে গেছে, বাংলাদেশ নয়। যে ঘটনাগুলো ঘটছে, এগুলো বাংলাদেশের চরিত্র নয়।
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম স্মরণে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে ওয়ার্কার্স পার্টি। সভাপতির বক্তব্যে রাশেদ খান মেনন বলেন, পরিকল্পিতভাবে দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনাগুলো ঘটানো হচ্ছে। গতকাল নড়াইলের ঘটনায় সেটিই মনে হয়েছে।
মেনন মনে করেন, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে গণ–আদালত, গণজাগরণ মঞ্চ যেভাবে এক হয়েছিল, তেমনি আবার ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে তরুণদের নিয়ে মাঠের লড়াই করে সাম্প্রদায়িকতা ঠেকাতে হবে।
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, যে বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, তা হাতছাড়া হয়ে গেছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী বিবর্ণ জয়ন্তীতে পরিণত হয়েছে।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, তরুণদের সঙ্গে রাখতে হবে। আগামীর আন্দোলনে তরুণদের প্রয়োজন। দেশে যুদ্ধাপরাধের কিছু বিচার হয়েছে। তবে যারা যুদ্ধাপরাধ করেছে, সে সংগঠনের বিচার হয়নি। দীর্ঘকালের দাবি, ব্যক্তির পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধে সংগঠনের বিচার করা হোক। সেটি থাকা সত্ত্বেও ২০১৪ সাল থেকে এর বিচার ঝুলে আছে।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে কার্যকর অর্থে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা খুব সহজসাধ্য নয়। এ কাজ স্বল্প সময়ে সম্ভবও নয়। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা জারি রাখার পরিবেশ যদি আমরা তৈরি করতে না পারি, তাহলে সামনের দিনে ভয়াবহ পরিস্থিতি আমাদের জন্য অপেক্ষা করবে।
আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, এমন একটা রাষ্ট্রের স্বপ্ন আমরা দেখতে চাই, যেখানে ধর্মীয় ও জাতিগত সব সম্প্রদায়ের মানুষ একসঙ্গে সমঅধিকার নিয়ে বাস করবে। যে রাষ্ট্রে মানুষে মানুষে কোনো বৈষম্য থাকবে না, ধর্মীয়-জাতিগত পরিচয়ের কারণে কোনো বৈষম্য থাকবে না, সে রাষ্ট্রই সবার কাম্য।