জাতির জনক ও সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে আজ শনিবার আওয়ামী লীগ ও দলের অঙ্গ-সহযোগী এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী ও কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মণি ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।
দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ কলাবাগান ক্রীড়াচক্র মিলনায়তনে আলোচনা সভা এবং শেখ হাসিনার সু-স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া এবং মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আফজালুর রহমান বাবু।
এদিকে, আওয়ামী যুবলীগ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বাদ আছর শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিলসহ যুবলীগের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতির বাসভবন সুধাসদন থেকে ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই ভোরে শেখ হাসিনাকে আটক করা হয়। তখন ক্ষমতায় ছিল সেনা–সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। পরে কয়েকটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সংসদ ভবন এলাকায় স্থাপিত বিশেষ কারাগারে বন্দি রাখা হয় তাঁকে। এর প্রতিবাদে ফেটে পড়েন দলটির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। ধীরে ধীরে তা তীব্র হয়।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আট সপ্তাহের জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধুকন্যার আপসহীন ও দৃঢ় মনোভাব এবং সবার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। মুক্তির পরদিনই তিনি চিকিৎসার উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্রে যান। চিকিৎসা শেষে ২০০৮ সালের ৬ নভেম্বর দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা। এরপর স্থায়ী জামিন দেওয়া হয় তাঁকে।
পরে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে জয়ের মধ্য দিয়ে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি আওয়ামী লীগসহ মহাজোট সরকার গঠিত হয়। দ্বিতীয় বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। তিনি দেশের একটানা তৃতীয়বারের প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো প্রতিবছরের ১৬ জুলাই ‘শেখ হাসিনার কারাবন্দী দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে। আর কৃষক লীগ দিনটি ‘গণতন্ত্র অবরুদ্ধ দিবস’ নামে পালন করে।