দেশভাগের সময় ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান ছেড়ে পরিবারের সঙ্গে ভারতে পাড়ি জমান রিনা ভার্মা। সে সময়ের ১৫ বছর বয়সী কিশোরী রিনা এখন ৯০ বছরের বৃদ্ধা। তবে ৭৫ বছর ধরে আদি বাড়ির স্মৃতি হাতড়ে বেড়িয়েছেন রিনা। খুব করে চেয়েছিলেন মৃত্যুর আগে একবার হলেও আদি ভিটা ঘুরে আসবেন।
অবশেষে গত বুধবার ৯০ বছর বয়সী রিনা পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি শহরে তাঁর আদি ভিটায় যেতে পেরেছেন। ৭৫ বছর ধরে পুশে রাখা স্বপ্ন পূরণ হয়েছে তাঁর। খবর বিবিসির।
দেশভাগের কয়েক সপ্তাহ আগেই পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাওয়ালপিন্ডি ছাড়ে রিনার পরিবার। তবে ভারতে গিয়ে তিনি কখনও তাঁর জন্মভিটার কথা ভুলতে পারছিলেন না। ২০২১ সালে এক সাক্ষাৎকারে একবারের জন্য হলেও আদি ভিটায় যাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষার কথা বলেছিলেন রিনা। পরে ‘ইন্ডিয়া-পাকিস্তান হেরিটেজ ক্লাব’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপের কর্মীরা রাওয়ালপিন্ডিতে রিনার আদি বাড়ি খুঁজতে শুরু করেন। শেষে এক নারী সাংবাদিক বাড়িটি খুঁজে পান।
করোনার কারণে গত বছর পাকিস্তানে যেতে পারেননি রিনা। চলতি বছরের মার্চে ভিসার আবেদন করেন তিনি। কিন্তু তাঁর ভিসার আবেদন বাতিল করা হয়। আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলে তাঁর মন ভেঙে পড়েছিল। পরে তাঁর গল্পটি পাকিস্তানের এক মন্ত্রীর নজরে আসে। তিনি দ্রুত রিনার আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দিল্লিতে অবস্থিত পাকিস্তানি হাইকমিশনকে নির্দেশ দেন। কয়েক দিনের মধ্যেই রিনা পাকিস্তানের ভিসা পেয়ে যান।
গত বুধবার রিনা তাঁর জন্মভিটায় গেলে সেখানে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে, বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে নেচে-গেয়ে তাঁকে স্বাগত জানানো হয়। এ সময় আনন্দে তাঁর চোখ জ্বলজ্বল করছিল। তবে এ সময় কষ্টও পাচ্ছিলেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি আমার পরিবারের সঙ্গে এ মুহূর্ত ভাগাভাগি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা সবাই চলে গেছেন। আমি এখানে আসতে পেরে খুশি। তবে আমি আজ এখানে একাকী বোধ করছি।