‘তারেকের জন্য বিএনপি দেশের রাজনীতির পরিবেশ নষ্ট করছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

মাহবুব-উল আলম হানিফ
মাহবুব-উল আলম হানিফ। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘নষ্ট রাজনীতির হোতা’ বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, তারেকের জন্যই বিএনপি দেশের রাজনীতির পরিবেশ নষ্ট করছে।

মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) বিকাল ৩টায় রাজধানীর বনানী সোসাইটি মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তরের বনানী থানার ১৯ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

universel cardiac hospital

হানিফ বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থার কাছে খবর এসেছে বিএনপি দেশে আবারও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করার জন্য পরিকল্পনা করছে। লন্ডন থেকে পলাতক সন্ত্রাসী তারেক রহমান নাশকতার নির্দেশ দিয়েছে। বিএনপি দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার পাঁয়তারা করছে। আমাদের দলের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’

সরকার আন্দোলনের নামে দেশের রাজপথে অস্থির করার সুযোগ দিবে না উল্লেখ করে মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘দেশে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো নাশকতার চেষ্টা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও বরদাশত করবে না।’

হানিফ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন পরিষ্কারভাবে বলেছেন আওয়ামী লীগের দ্বার সবসময় খোলা। আন্দোলন করে নয়, আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে আসলে চা খাওয়ানো হবে। নেত্রী চা খাওয়াবেন। এর মাধ্যমে যে বার্তা দেয়া হয়েছে বিএনপির সন্ত্রাসী নেতারা তা বুঝতে পারেনি। এ বার্তা পরিষ্কার। দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য যদি দেশের কোনো রাজনৈতিক দল আলাপ করতে চায়, প্রধানমন্ত্রীর দ্বার খোলা আছে। বিএনপি সেটাকে ভুল ব্যাখ্যা করছে।’

দেশের সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশ করে হানিফ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু হবে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা চাই সেই নির্বাচনে সব দল অংশ নিবে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আপনাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করার মানসিক প্রস্তুতি নিন।’

তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেয়ার কথা বলছে তার কারণ একটাই। তাদের নেত্রী খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে আছেন। নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই। তারেক রহমান হাওয়া ভবন বানিয়ে লুটপাট করেছে। দণ্ডিত ও পলাতক আসামি তারেক রহমানও নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। তাই তাদের ফন্দিফিকির একটাই অন্য কোনো সরকার এসে সুযোগ দলে নির্বাচনে অংশ নিবে।

বিএনপির সিনিয়র নেতারা কথায় কথায় মিথ্যাচার করে জাতিকে বিভ্রান্ত করছেন উল্লেখ করে হানিফ বলেন, মহামারি করোনার পর রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা পৃথিবীতে জ্বালানি সংকট চলছে। সবকিছুর দাম বাড়ছে। ঠিক এসময়েও বিএনপির সিনিয়র নেতারা মিথ্যাচার করে জাতিকে বিভ্রান্ত করছেন।

বিএনপি শাসনামল ও বর্তমান সময়ে দেশের রিজার্ভে তুলনা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা বলেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নাকি দেশের রিজার্ভের পরিমাণ সবচেয়ে কম। অথচ বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় দেশে রিজার্ভ ছিলো ৫ বিলিয়ন ডলার। আর এখন এতো সংকটের মধ্যেও দেশের রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলার। বিএনপি নেতারা এই নির্লজ্জ মিথ্যাচারের আগে আয়নায় তাদের নিজের চেহারা দেখা প্রয়োজন।

জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে ভোগ বিলাসে মত্ত ছিলেন উল্লেখ করে হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন আর আজ তার সুযোগ্যকন্যা শেখ হাসিনা আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দিয়েছেন। একসময় যে বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির ব্যর্থ রাষ্ট্র বলা হতো আজ সেই বাংলা উপচেপড়া ঝুড়ির দেশ। চরম দারিদ্রের দেশ থেকে বিশ্বে উন্নয়শীল দেশের স্বীকৃতি লাভ করেছে। ২০৩১ সালের মধ্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হবে।

উন্নত ও মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ মসৃন পথে আসেনি স্মরণ করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর একাত্তরের পরাজিত শক্তি বিএনপি-জামায়াত ইস্যু সৃষ্টি করে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। রাজপথে পথে নাশকতা করে দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করেছে। সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি। সম্মেলন উদ্বোধন করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।

ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। বিশেষ বক্তা ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ কাদের খান, মহিলা সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মেহেরুননেসা মেরী ও কার্যনির্বাহী সদস্য মো. আবদুল কাশেম। সভাপতিত্ব করেন বনানী থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন।

শেয়ার করুন