নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে একদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ছে, অন্যদিকে দেশের বাজারেও ডলার সংকট প্রকট। এ অবস্থায় টাকার মান পড়েই চলছে। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) সব রেকর্ড ভেঙে খোলাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ১১২ টাকায়।
নগদে ডলার কেনা-বেচায় জড়িত ব্যবসায়ীরা জানান, গত কয়েক সপ্তাহে দেশে খোলাবাজারে দ্রুত ডলারের দাম বেড়েছে। গত সোমবারও সাধারণ মানুষ ১০৭ টাকায় ডলার পেয়েছেন। এক দিনের ব্যবধানে ডলারের দাম ৫ টাকা বেড়েছে।
বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচায় ব্যবসায় যুক্ত একজন বলেন, চলতি বছরের শুরু থেকেই খোলা বাজারে নিয়মিত ডলারের দাম বেড়েছে। গত ঈদুল আজহার আগেও বাজারে ডলারের দাম ১০০ টাকার নিচে ছিল। তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন ব্যক্তি ও এক্সচেঞ্জ থেকে ডলার কিনে থাকি। বিদেশগামী যাত্রীদের জন্য চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আমরা প্রয়োজনীয় ডলার সরবরাহ করতে পারছি না।
রাজধানীর মতিঝিল এলাকার কার্ব মার্কেটের ডলার বিক্রেতা রিপন বলেন, ‘বাজারে ডলারের ব্যাপক চাহিদা। আজ অনেক গ্রাহক আসছেন, কিন্তু তাদের সবার কাছে ডলার বিক্রি করতে পারছি না। আজ বিক্রি করছি ১১২ টাকা থেকে ১১২.৫০ টাকায়। অন্যদিকে, খুব কম মানুষই বাজারে বিক্রির জন্য ডলার নিয়ে আসছে।’
খোলাবাজারের পাশাপাশি আন্ত ব্যাংক লেনদেনেও ডলারের দর বাড়তির দিকে। গতকালও আন্ত ব্যাংক লেনদেনে ডলারের দর ছিল ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা। গত ২১ জুলাই এই দর ছিল ৯৪ টাকা ৪৫ পয়সা। গত বছরের ২৬ জুলাই প্রতি ডলারের দর ছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা। এর বিপরীতে গত এক বছরে টাকার মূল্য কমেছে ১১ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত আন্ত ব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল; কিন্তু এর পর থেকে বড় ধরনের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলারসংকট শুরু হয়, যা এখনো অব্যাহত আছে। ২০২১ সালের আগস্টের শুরুতেও আন্ত ব্যাংকে প্রতি ডলারের মূল্য একই ছিল। তবে গত বছরের ৩ আগস্ট থেকে দু-এক পয়সা করে বাড়তে বাড়তে গত বছরের ২২ আগস্ট প্রথমবারের মতো ডলারের দাম ৮৫ টাকা ছাড়ায়।