সারা বিশ্বের মতো বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) দেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস-২০২২। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘হেপাটাইটিস ক্যান নট ওয়েট’ অর্থাৎ হেপাটাইটিস নির্মূলের এখনই সময়। প্রতিপাদ্যে হেপাটাইটিস নির্ণয় ও এর চিকিৎসার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
সারা বিশ্বে প্রায় ৩০ কোটি মানুষ হেপাটাইটিসের কোনো না কোনো ধরনে আক্রান্ত। অথচ প্রতি ১০ জনের নয়জনই জানেন না যে, তাদের হেপাটাইটিস আছে।
বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি মানুষ হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসে আক্রান্ত। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় শতকরা ৫ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ হেপাটাইটিস বি এবং এক শতাংশ মানুষ হেপাটাইটিস সি ভাইরাসের বাহক। ভাইরাসটি প্রতিরোধে অসচেতনতা ও সময় মতো শনাক্ত না হওয়ায় অসংখ্য রোগী এ চিকিৎসার আওতামুক্ত থেকে যাচ্ছেন।
হেপাটাইটিস বা লিভারের প্রদাহ এ, বি, সি, ডি ও ই- এই পাঁচ ধরনের ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে। এর মধ্যে হেপাটাইটিস এ ও ই খাদ্য ও পানিবাহিত, যা থেকে স্বল্পমাত্রার জন্ডিস হয়ে থাকে। তবে এটি সাধারণত ৪ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে শরীরে ইমিউন সিস্টেমের (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা) মাধ্যমে সেরে যায়।
তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক লিভার ফেইলিউর (নিষ্ক্রিয়) হতে পারে। এজন্য প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত ও চিকিৎসা নিশ্চিতে গুরুত্ব দিতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা হেপাটাইটিস রোগ নির্মূলে মানুষের সচেতনতার ওপর সর্বোচ্চ জোর দেন। সচেতনতা বাড়াতে শিশুদের পাঠ্যবইয়ে বিষয়টি সংযুক্ত করার পরামর্শ দেন তারা। এছাড়াও নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন, টিকা দেওয়া, ওষুধের দাম, চিকিৎসা সেবা, হেপাটাইটিস নির্ণয়ে পরীক্ষার সুযোগ, বিনামূল্যে টিকার ওপর জোর দেন তারা।
নোবেলবিজয়ী বিজ্ঞানী বারুচ স্যামুয়েল ব্লুমবার্গ হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস আবিষ্কার করেন। তিনি এই রোগ নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষাব্যবস্থা উন্নত করেন ও টিকা দেওয়া শুরু করেন। চিকিৎসাবিদ্যায় তার এই অবদানকে স্বীকৃতি জানাতে তার জন্মদিনে (২৮ জুলাই) বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস পালন করা হয়।