মূল্যবৃদ্ধির পরও বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম ভারতের সমান ও আশেপাশের অনেক দেশের তুলনায় কম বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শনিবার (৬ আগস্ট) বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী কেন্দ্র—টিএসসি মিলনায়তনে ‘স্পর্ধিত তারুণ্যের প্রতিচ্ছবি শেখ কামাল’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।
বক্তব্যের শুরুতেই মন্ত্রী শহীদ শেখ কামালের স্মৃতিচারণ করে বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল ছিলেন অনবদ্য ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠক। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন শেখ কামাল প্রতিটি তরুণের অন্তরে তারুণ্যের শক্তি হয়ে বেঁচে থাকবেন।
ড. হাছান বলেন, সরকার গত অর্থবছরে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ৫৩ হাজার কোটি টাকা বা প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার ভর্তুকি দিয়েছে। আশেপাশের দেশগুলো এ ধরণের ভর্তুকি দেয়নি। ফলে সেসব দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য অনেক আগেই বাড়ানো হয়েছে এবং তাদের মূল্য আমাদের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। পাশের দেশ ভারতে অনেক আগে থেকে ডিজেলের দাম বাংলাদেশি ১১৪ টাকা ও অকটেনের দাম ১৩৪-৩৫ টাকা। আমাদের দেশে মূল্য কম হওয়ায় সীমান্ত দিয়ে প্রচুর জ্বালানি তেল পাচার হয়ে যাচ্ছিল।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারের পক্ষে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব নয় এবং বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে আমাদের আজকে যে মূল্যবৃদ্ধি, আশেপাশের দেশগুলোতে বহু আগেই তারা জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে মূল্যবৃদ্ধির পর ডিজেলের দাম এখন প্রতি লিটারে ১১৪ টাকা। এই দেশি মুদ্রামানে ভারতের কলকাতায় ১১৪ টাকা, সর্বভারতীয় মূল্য ১১২ টাকা, চীনে ১১৮ টাকা, জ্বালানি রপ্তানিকারী দেশ আরব-আমিরাতে লিটারপ্রতি ডিজেলের দাম ১২৩ টাকা, নেপাল ১২৭.৮২ টাকা, ইন্দোনেশিয়ায় ১৩৮.২৪ টাকা, সিঙ্গাপুরে ১৮৯.৭৮ টাকা, হংকংয়ে ২৬০.৭৫ টাকা। অর্থাৎ আমাদের দেশে মূল্য সমন্বয়ের পরও আশেপাশের এসব দেশের চেয়ে মূল্য কম ও ভারতের সমান রয়েছে।
পরিবহন খাতে জ্বালানি মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবের বিষয়ে ড. হাছান বলেন, একটি ৫০ সিটের বাসে ৭০ শতাংশ যাত্রী থাকলে প্রতি কিলোমিটারে মূল্যবৃদ্ধি ঘটবে মাত্র ২৯ পয়সা। এখন যাত্রীপ্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৮০ পয়সা ভাড়া নেওয়া হয়, এখন ২৯ পয়সা বেড়ে হবে দুই টাকা ৯ পয়সা। সরকার শিগগির পরিবহন খাতের সবাইকে নিয়ে বসবে, যাতে কেউ অন্যায় সুযোগ না নিতে পারে।
মন্ত্রী এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদেরকে এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঠিক তথ্য নিয়ে সরব হওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস। সঞ্চালক ছিলেন সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। অন্যদের মধ্যে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ, ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।