বাৎসরিক সামরিক মহড়ার আওতায় তাইওয়ান মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার সামরিক তৎপরতা চালাচ্ছে। চীনের সামরিক কার্যকলাপের মাঝে এমন পদক্ষেপের ফলে উত্তেজনা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। চীনের জোরালো সামরিক শক্তি প্রদর্শনের মাঝে তাইওয়ানও পূর্বঘোষিত দুই দিনের সামরিক মহড়া শুরু করেছে। দেশের চারিদিকে চীনা সামরিক বাহিনীর মহড়া সত্ত্বেও তাইওয়ান সেই পরিকল্পনা থেকে সরে আসে নি।
বাৎসরিক হান কুয়াং মহড়ার আওতায় তিয়েন লেই ড্রিল নামে পরিচিত এই মহড়ায় সম্ভাব্য চীনা হামলা প্রতিহত করার নানা কৌশল পরখ করে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে চীনা বাহিনী যদি তাইওয়ানের উপকূলে এসে দেশে প্রবেশ করার চেষ্টা করে, সেই পরিকল্পনা বানচাল করার সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে তাইয়ানের বাহিনী। সেই অ্যান্টি ল্যান্ডিং এক্সারসাইজ এর আওতায় অন্যান্য কৌশলও নিতে চায় সে দেশ। গত জুলাই মাসেই জানানো হয়েছিল যে, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার তাইওয়ানের সেনাবাহিনী এই মহড়া চালাবে।
কিন্তু মার্কিন সংসদের নিম্ন কক্ষেপ স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরে রুষ্ট হয়ে চীন যে দ্বীপরাষ্ট্রের চারিদিকে লাগাতার সামরিক শক্তি প্রদর্শন করে যাবে, এমনটা তখন ধারণা করা যায় নি। চীন সেই সামরিক মহড়ার মেয়াদ আরও বাড়ানোর ঘোষণা করেছে। তাইওয়ানের সূত্র অনুযায়ী চীনা বাহিনীর কোনো যুদ্ধবিমান বা রণতরি তাইওয়ানের ১২ নটিকাল মাইলের মধ্যে প্রবেশ করে নি।
তবে চীনা সেনাবাহিনীর প্রকাশিত ভিডিওয় এক যুদ্ধবিমানের ককপিট থেকে তাইওয়ানের উপকূল ও পাহাড়ের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। চীন এমনকি রাজধানী তাইপের উপর দিয়ে ব্যালেস্টিক মিসাইলও নিক্ষেপ করেছে। মঙ্গলবার চীনা বাহিনী সাবমেরিন প্রতিহত করার মহড়া সম্পর্কে আরও তথ্য প্রকাশ করেছে। এমন উত্তেজনার মাঝে দুই দেশের সেনাবাহিনীর সমান্তরাল মহড়া পরিস্থিতি আরও নাজুক করে তুলছে। তাইওয়ানের টেলিভিশনের সূত্র অনুযায়ী দেশের দক্ষিণে তাইওয়ানের বাহিনীর মহড়ার কাছেই চীনা বাহিনী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চীনের সামরিক মহড়ার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ উ সাংবাদিকদের বলেন, তাইওয়ান প্রণালীসহ গোটা অঞ্চলের বাস্তবতা পরিবর্তন করাই চীনের আসল মতলব। তার মতে, বিশাল মাত্রায় সামরিক মহড়া, ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ও সাইবার হামলার মাধ্যমে বেইজিং আসলে তাইওয়ানের উপর হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
উ বলেন, পেলোসির সফরকে আছিলা হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে চীন।
তাউওয়ানের প্রতি সংহতি দেখানোর জন্য তিনি অ্যামেরিকাসহ পশ্চিমা সহযোগীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, এর মাধ্যমে গোটা বিশ্বে স্পষ্ট বার্তা পাঠানো হচ্ছে যে গণতন্ত্র স্বৈরতন্ত্রের সামনে মাথা নত করবে না। তাইওয়ানের সামরিক মহড়ার ফলে সেই অঞ্চলে বেইজিং আরও উত্তেজনা সৃষ্টি করবে বলে অ্যামেরিকা মনে করছে না। মার্কিন প্রেসি়ডেন্ট জো বাইডেন বলেন, তিনি দুশ্চিন্তায় না ভুগলেও চীনের তৎপরতা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তবে চীন এর বেশি কিছু করবে বলে বাইডেন মনে করছেন না।