ফেসবুকে প্রেম করে কলেজছাত্রকে বিয়ে করা নাটোরের খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোছা. খাইরুন নাহার আত্মহত্যা করেছেন বলেই প্রাথমিক ধারণা করছে পুলিশ।
নাটোর শহরের বলারিপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে আজ রোববার সকালে খাইরুন নাহারের মরদেহটি উদ্বারের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) লিটন কুমার সাহা সাংবাদিকদের একথা জানান।
খাইরুন নাহারের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তার স্বামী মো. মামুন হোসেনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ঘটনার তদন্তসাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন এসপি লিটন কুমার সাহা।
বেলা ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে এক ব্রিফিংয়ে এসপি লিটন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলাম। তারা স্বামী-স্ত্রী তাদের বিয়েকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছিল। পরবর্তীতে সামাজিক, পারিবারিক এবং কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতায় তাদের মধ্যে একটা মানুসকি চাপ সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে।
তিনি বলেন, তার (কলেজশিক্ষিকা) সন্তানদের পক্ষ থেকেও একটা মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। এসব চাপের কারণেই এটা আত্মহত্যা কি না, অথবা অন্য কোনো কারণ আছে কি না আমরা তদন্ত করে দেখছি।
এক প্রশ্নের জবাবে এসপি লিটন কুমার সাহা বলেন, প্রাথমিকভাবে এটা আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। কারণ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে তার ওড়নাটা প্যাঁচানো, সেটি তার স্বামী নামাতে না পেরে অগ্নিসংযোগ করে নামানো হয়। একারণে ফ্যানের কিছুটা গলেও গেছে। এরপরও অন্য কোনো কারণ আছে কি না আমরা গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখছি। তদন্ত করে মূল রহস্য উদঘাটন করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
উল্লেখ্য, কলেজশিক্ষিকা খাইরুন নাহারের প্রথম বিয়ে হয়েছিল রাজশাহীর বাঘায়। সেখানে তার এক সন্তানও রয়েছে। পারিবারিক কলহের কারণে সে সংসার বেশিদিন টেকেনি।
এরইমাঝে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় নাটোর এনএস সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ২২ বছরের মামুনের সঙ্গে। পরিচয়ের ছয় মাস পর বিয়ে করেন তারা। তাদের এই বিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচিত হয়।
জানা গেছে, খাইরুনের সঙ্গে বিয়ে মামুনের পরিবার মেনে নিলেও কলেজশিক্ষিকার পরিবার মেনে নেয়নি। সামাজিকভাবে বিভিন্ন মহলে নানা কুৎসিত মন্তব্য-কটাক্ষের শিকারও হচ্ছিলেন। কিন্তু এই দম্পতি সেসব তোয়াক্কা না করে নতুন সংসারে ব্যস্ত ছিলেন।