খুলনার দাকোপ উপজেলার পশুর নদের পারের বাণীশান্তা ইউনিয়নের মানুষের একমাত্র আয়ের উৎস কৃষি। তবে মোংলা বন্দর চ্যানেলের গভীরতা বাড়ানোর জন্য পশুর নদ খনন করে বালু ফেলতে তাদের সেই আবাদি জমি হুকুমদখল করা হয়েছে। এতে জীবিকা হারানোর আশঙ্কায় এলাকার মানুষ তাদের জমিতে মাটি ফেলতে দিতে রাজি নন। কিন্তু মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মিথ্যাচার করে সরকারকে ভুল বুঝিয়ে যাচ্ছেন। তিনি শান্তিপূর্ণ ও স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনকারীদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন। তাই তার অপসারণ দাবি করেছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
খুলনার বাণীশান্তায় তিন ফসলি উর্বর কৃষিজমিতে বালুমাটি ফেলার ভুল সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আজ বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক নাগরিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভা থেকে এ দাবি তোলা হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), ব্র্যাক, নিজেরা করি, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন জাতীয় নাগরিক সমন্বয় সেল যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি সুলতানা কামাল বলেন, কৃষিজমি রক্ষার আন্দোলন শুধু বাণীশান্তার এলাকার বাসিন্দাদের নয়, জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত ও শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছে। কিন্তু মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা যেসব কথা বলেছেন, সেটা মিথ্যাচার। একজন সরকারি কর্মচারী হয়ে দায়িত্বে থেকে মিথ্যা বলা চরম অসদাচরণ। তিনি তার পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। এই অসদাচরণের অভিযোগে তিনি অভিযুক্ত হতে পারেন। সুলতানা কামাল মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি করেন।
অনুষ্ঠানে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিকল্প স্থানে বালু ফেলার দাবি জানান প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান। বাণীশান্তার কয়েকজন বাসিন্দা তাদের ভোগান্তির কথা তুলে ধরেন।
নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবিরের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ, ঢাকা মহানগর সর্বজনীন পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি মণীন্দ্র কুমার নাথ প্রমুখ বক্তব্য দেন।