রাজউকের প্লট বরাদ্দ নিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের জনপ্রিয় সংসদ সদস্য এবং ‘মত ও পথ’ সম্পাদক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে জড়িয়ে সম্পূর্ণ মিথ্যা, অসত্য, আপত্তিজনক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ প্রকাশিত করার অভিযোগে দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও পত্রিকাটির প্রতিবেদক সাদ্দাম হোসাইনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ ২৪ আগস্ট (বুধবার) বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সমীপে উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলা তিনি নিজেই পরিচালনা করবেন বলে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল সূত্রে জানা গেছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, প্রথম আলোর প্রতিবেদক সাদ্দাম হোসাইন এবং সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমান পরস্পর যোগসাজশে মোকতাদির চৌধুরী এমপির নাম ও ছবি ব্যবহার করে গত ২৭ জুলাই ‘রাজউকের প্লট বরাদ্দ : ক্ষমতাবান স্বামী-স্ত্রীদের প্লট দিতে পাল্টে যাচ্ছে রাজউকের বিধি’ এবং ২৯ জুলাই ‘রাজউকের স্বেচ্ছাচার : ক্ষমতাবানদের সুবিধা দিতে বিধি সংশোধন নয়’ শিরোনামে যথাক্রমে প্রতিবেদন ও সম্পাদকীয় প্রকাশ করে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে বিতর্কিত এই পত্রিকাটির আপত্তিজনক এ সংবাদ ও সম্পাদকীয় ছাপানোর বিরুদ্ধে পত্রিকার সম্পাদকের কাছে সংসদ সদস্য গত ০২ আগস্ট প্রতিবাদলিপি প্রেরণ করেন। কিন্তু সম্পাদক তাঁর প্রতিবাদলিপিটি গত ৮ আগস্ট আংশিক/বিকৃত আকারে ছাপায়। তাতে অভিযোগের কারণ প্রশমিত না হয়ে বরং প্রকোপিত হওয়ায় তিনি প্রেস কাউন্সিল অ্যাক্ট,১৯৭৪ এর ১২ ধারার আলোকে প্রতিকার পাওয়ার আর্জি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের টানা তৃতীয়বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোকতাদির চৌধুরী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় এবং এর অনলাইনে গত ২৭ জুলাই ‘রাজউকের প্লট বরাদ্দ: ক্ষমতাবান স্বামী–স্ত্রীদের প্লট দিতে পাল্টে যাচ্ছে রাজউকের বিধি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন এবং ২৯ জুলাই ‘রাজউকের স্বেচ্ছাচার: ক্ষমতাবানদের সুবিধা দিতে বিধি সংশোধন নয়’ শিরোনামে প্রকাশিত সম্পাদকীয়টি ন্যক্কারজনক ও সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রতিবেদনে কোনোকিছু সঠিকভাবে যাচাই না করেই আমার নাম এবং ছবি ব্যবহার করার মাধ্যমে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে কারও ইন্ধনে আমাকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে। স্পষ্টতই কোনো মহলের দ্বারা ভিন্নভাবে প্রভাবিত হয়ে অথবা কোনো মহলের স্বার্থ সুরক্ষায় শুধু একজনকেই লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে। কোনো একটি মহলের দ্বারা লাভবান হয়ে প্রতিবেদক ও সম্পাদক উভয়ই কাজ করছেন, এটি বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এছাড়া রাজউকের প্রকল্পের প্লট পাওয়ার শর্তাদিতে অসঙ্গতি সুস্পষ্ট থাকা সত্ত্বেও প্রতিবেদনে রাজউকের নীতিমালার এ অসঙ্গতি নিয়ে কোনো বক্তব্য তুলে ধরা হয়নি। এমনকি আমার পক্ষ থেকে রাজউক-কে যে কোনো প্রকার চাপ দেওয়া হয়নি, এ কথাও কোথাও উল্লেখ করা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে চলমান যে বিধির আওতায় প্লট বরাদ্দ হয়, সেখানেও অনেক স্বামী-স্ত্রীই ভিন্ন ভিন্ন প্লটের অধিকারী, যাঁদের মধ্যে সংসদ সদস্য, আমলা, প্রাক্তন আমলা, (তথাকথিত) বিশিষ্টজনও রয়েছেন, যাদের কথা বোধগম্য কারণেই প্রতিবেদনটিতে স্থান পায়নি। কেননা, মহল বিশেষের টার্গেট তো আমি। প্রথম আলোর প্রতিবেদক ও সম্পাদক তাদের হয়েই কাজ করছেন। এমনটি ১/১১ এর সময়েও পত্রিকাটি করেছে। তারা আমার ৮ একর জমিকে ৮০ একর বানিয়ে দিয়েছিলো। ২০০৯ সালে আমার বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের একটি কলেজের তোরণকে আমার বাড়ির গেটে আমার নামের তোরণ বলে সংবাদ পরিবেশন করেছিলেন। এ ধরনের অসত্যতা পত্রিকাটির চারিত্রিক বৈশিষ্টে পরিণত হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেকের প্লটই রেজিষ্ট্রি করে দিয়েছে রাজউক (অনুসন্ধানী প্রতিবেদন কি বলে?)। তাঁদের কি হবে? স্বামীর কারণে বা স্ত্রীর কারণে যদি অন্যজন বঞ্চিত হয়, তাঁদের বৈবাহিক সম্পর্কের অবসান হলে অবস্থাটা কি দাঁড়াবে?