মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলো যুক্তরাজ্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

রোহিঙ্গা
ফাইল ছবি

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকা একাধিক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাজ্য। মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর সামরিক বাহিনীর চালানো দমন অভিযানের পাঁচ বছর পূর্তিতে এ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেওয়া হলো।

বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) যুক্তরাজ্য সরকারের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো স্টার স্যাফায়ার গ্রুপ অব কোম্পানিজ, ইন্টারন্যাশন্যাল গেটওয়েজ গ্রুপ অব কোম্পানিজ (আইজিজি) ও স্কাই ওয়ান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অস্ত্র ও রাজস্ব হাতে পাওয়ার সুযোগ সীমিত করতেই এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিজে) গাম্বিয়া বনাম মিয়ানমারের মামলায় যুক্তরাজ্য হস্তক্ষেপ করতে চায় বলে জানান দেশটির এশিয়া বিষয়ক মন্ত্রী আমান্ডা মিলিং। রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা চালানোর অভিযোগ এনে ২০১৯ সালের নভেম্বরে নেপিদোর বিরুদ্ধে মামলাটি করেছিল গাম্বিয়া। মিয়ানমার ২০১৬ ও ২০১৭ সালে ‘জেনোসাইড কনভেনশন’ লঙ্ঘন করে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে কি না, তা নির্ধারণ করবে আইসিজে।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা শুরু করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমার সেনাদের অভিযানে ১০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নিহত হয়, ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযানে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী যৌনসহিংসতা চালিয়েছিল। একই সঙ্গে নির্যাতন, শিশুদের ওপর গুরুতর সহিংসতা ও গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল।

যুক্তরাজ্য সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এসব অপরাধ করলেও তাদের দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এটি মারাত্মক উদ্বেগের বিষয় যে, দেশটির সামরিক বাহিনী বর্তমানে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী গোষ্ঠীগুলোর ওপর একই কায়দায় দমনপীড়ন চালাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যা হয়েছে তা ছিল জাতিগত নিধন অভিযান। তাই মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নৃশংসতা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে এবং তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে যুক্তরাজ্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

মন্ত্রী আমান্ডা মিলিং বলেন, ‘যারা স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র নিয়ে আমাদের মূল্যবোধকে ক্ষুণ্ন ও ধ্বংস করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্য সব সময় কঠোর অবস্থানে যাবে। বিগত পাঁচ বছর ধরে আমরা রোহিঙ্গা জনগণের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি এবং মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর জাতিগত নিধন অভিযানের নিন্দা জানাচ্ছি।’

শেয়ার করুন