২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে ময়মনসিংহ–৯ (নান্দাইল) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিনের একটি বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে নান্দাইলের সর্বত্র চলছে আলোচনা–সমালোচনা।
সংসদ সদস্য তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমারে ভোট দিয়া কোনো দিন পাস করাইতে পারেন নাই। প্রথমবার আল্লাহ দিছে, দ্বিতীয়বার খালি গেছুইন আর আইছুইন। খুব কষ্ট হইছে না। খালি গেছুইন আর আইছুইন, যতবার পারছুইন দিছুইন। এইগুলারে ভোট মনে করি না আমি।’
গত শনিবার নান্দাইলের মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কালিয়াপাড়া বাজারে ওয়ার্ড যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় সেখানে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থক ও স্থানীয় লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
বক্তৃতার শুরুর দিকে সংসদ সদস্য বলেন, ‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি খোদা আমাকে এমপি বানিয়েছেন, আপনারা (সভায় উপস্থিত জনতা) না। কথা সত্য না মিথ্যা? পেছনের মানুষগুলো কি বোবা? আমি প্রত্যেকটা মানুষের কাছে জবাব চাই। আমাকে আপনারা ভোট দেন নাই। আমি আপনাদের কাছে ভোট চাইতে আসি নাই।’
আনোয়ারুল আবেদীন খান আরও বলেন, ‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি খোদা যখন আমাকে এমপি বানাল, তখন আমার সঙ্গে যিনি ছিলেন, তিনি আমার সমপর্যায়ের মানুষ ছিলেন না। তিনি অনেক বড় মাপের মানুষ ছিলেন। উনি দেখতে সুন্দর, আমার চেয়ে দুই, তিন, পাঁচ, ছয় ইঞ্চি লম্বা। এ দেশের মানুষ কি তখন ভেবেছিল, জেনারেল সাহেবের (সাবেক সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল অব. আবদুস সালাম) হঠাৎ করে বিদায় হবে আর তুহিনের (বর্তমান সংসদ সদস্য) হঠাৎ করে নান্দাইলে আগমন হবে?’
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে সেদিন নান্দাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি সিদ্দিক, সাধারণ সম্পাদক মো. আজিজুল ইসলাম, মোয়াজ্জেমপুর ইউপির চেয়ারম্যান তাসলিমা আক্তার, যুবলীগ নেতা মো. শাহজাহান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আজ মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি। তবে সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে স্থানীয় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আনোয়ারুল আবেদীন খান দাবি করেছিলেন, তিনি এ ধরনের বক্তব্য দেননি। একটি পক্ষ তার বক্তব্যের বিকৃত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।
জানতে চাইলে নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খানের এ ধরনের বক্তব্য দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এমনকি তিনি সরকারকেও প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছেন। আমি তাঁর এ ধরনের বক্তব্যের নিন্দা জানাই।’