সাংবিধানিক সততা রক্ষা ছিলো তাঁর রাজত্বকালের মূলমন্ত্র

সম্পাদকীয়

সবচেয়ে বেশি সময় ধরে শাসন করা ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের গতকাল বৃহস্পতিবার জীবনাবসান হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে রাজতন্ত্রের একটি অধ্যায়ের ইতি ঘটলো। তাঁর মৃত্যুতে ব্রিটেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নেমে এসেছে শোকের কালো ছায়া। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান গভীর শোকবার্তা ও অতল শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। বিশ্বনেতারা রানির গভীর কর্তব্যবোধ, চারিত্রিক দৃঢ়তা ও উদারতার প্রতি সম্মান জানিয়েছেন। লন্ডনের সড়কে এখন শোকাতুর মানুষের ঢল।

আবেগঘন শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে আজ শুক্রবার থেকে বাংলাদেশে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। এই তিনদিন জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। তাঁর মৃত্যুতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। মত ও পথ পরিবারও রানির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করছে।

রানি এলিজাবেথ ১৯৫২ সাল থেকে টানা ৭০ বছর ধরে সিংহাসনে আসীন ছিলেন। তিনি নিজেই একটি একটি যুগের জন্ম দিয়ে গেছেন। দীর্ঘ ৭০ বছরে রাজতন্ত্রের নানা উত্থান-পতনের মধ্যেও জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে তিনি রেখে গেছেন এক গভীর ছাপ। নানা তর্ক-বিতর্কের পরও ব্রিটিশ জনগণের হৃদয়ে রাজপরিবারের প্রতি ভালোবাসা যেন চিরস্থায়ী হয়, তা নিশ্চিত করতে তিনি সারাজীবন সচেষ্ট ছিলেন।

অনেক ঝড়ঝঞ্ঝাতেও রাজতন্ত্রকে রক্ষা করেছেন সফলতার সঙ্গে। বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গে সহানুভূতি ও যোগাযোগ স্থাপন করার ক্ষমতা এবং ঐতিহ্য বজায় রাখা তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিলো। এটি ছিলো তাঁর সত্যিকারের নেতৃত্বের উদাহরণ।

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ দীর্ঘ শাসনামলে তাঁর দৃঢ় কর্তব্যবোধ এবং তাঁর সিংহাসন ও জনগণের জন্য তাঁর জীবন উৎসর্গ করার দৃঢ় সংকল্পকারী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। তাঁর রাজত্বকালের মূল স্তম্ভ হয়ে ওঠে সাংবিধানিক সততা রক্ষা। ফলে ‘রাজতন্ত্র’-এর জায়গা নেয় ‘রাজ-পরিবার’। তিনি হয়ে ওঠেন এক স্থায়ী নাম।

শেয়ার করুন