টানা তিন দিনের ছুটিতে পর্যটকে মুখর হয়ে উঠেছে পার্বত্য শহর রাঙ্গামাটি। শহরের যান্ত্রিকতা ও কোলাহল ভুলে প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটাতে হ্রদ পাহাড়ের শহর রাঙ্গামাটিতে ছুটে এসেছেন হাজারো পর্যটক। বুকিং হয়ে গেছে শহরের বেশির ভাগ হোটেল-মোটেল।
বৃহস্পতিবার (০৬ অক্টোবর) পর্যটকদের উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও শুক্রবার সকাল থেকে প্রচুর পর্যটকবাহী যানবাহন প্রবেশ করতে শুরু করে শহরে। শহরের বাসস্ট্যান্ড রিজার্ভ বাজারে দেখা যায়, পর্যটকবাহী গাড়ির দীর্ঘ সারি। অনেকে দলগতভাবে বাস নিয়ে আবার অনেকে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বেড়াতে এসেছেন রাঙ্গামাটি। এ সময় কিছুটা যানজটও তৈরি হয় শহরের এই প্রাণকেন্দ্রে।
শহরে নেমেই নাস্তা করার জন্য লাইন দিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায় পর্যটকদের। রিজার্ভ বাজার খাজা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক মো. রুবেল বলেন, আজ থেকে টানা ছুটি শুরু হওয়ায় সকাল থেকেই প্রচুর পর্যটক শহরে প্রবেশ করেছেন। আর এটা গাড়ির শেষ গন্তব্য হওয়াতে সবাই নেমে আমাদের এবং আশপাশের রেস্টুরেন্টগুলোতে নাস্তার জন্য ভিড় করছেন।
পর্যটকদের উপস্থিতির কারণে বুকিং হয়ে গেছে শহরের প্রায় অধিকাংশ হোটেল-মোটেল। যারা আগে বুকিং দিয়ে আসেননি তারা শহরে এসেই হোটেল বুকিং দিচ্ছেন। তাই গতকাল পর্যন্ত যেসব হোটেল-মোটেলে কিছু কক্ষ খালি ছিল সেগুলোও দ্রুত বুকিং হয়ে যাচ্ছে।
হোটেল মতি মহলের স্বত্বাধিকারী মো. শফিউল নেজাম বলেন, সকাল থেকে ভালো পর্যটক আসছে দেখতে পাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমাদের ৭০ শতাংশ রুম বুকিং আছে। আশা করছি আজ দুপুরের মধ্যে হোটেলের শতভাগ বুকিং হয়ে যাবে। আর আবহাওয়া যেহেতু ভালো রয়েছে, তাই আমরা আশা করছি আমাদের এবারের ব্যবসাটা ভালোই হবে।
হোটেল নাদিশা ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজার মো. শাহীন সুলতান বলেন, পূজার ছুটি এবং তারপর আবার টানা তিন দিনের ছুটিতে রাঙ্গামাটিতে এখন উৎসবমুখর পরিবেশ। যথেষ্ট পরিমাণ পর্যটক এসেছে রাঙ্গামাটিতে। ৩ তারিখ থেকে আমাদের হোটেল শতভাগ বুকিং রয়েছে। যদি রাঙ্গামাটির হোটেলগুলোর ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত পর্যটক আসে, তাহলে রুম না পেয়ে অনেককে ঘুরে চলে যেতে হতে পারে।
রাঙ্গামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৃজন কান্তি বড়ুয়া বলেন, দুর্গাপূজার বিজয়া দশমী, সাপ্তাহিক ছুটি এবং ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটি মিলিয়ে আমরা বেশ কদিন ছুটি পেয়েছি। রাঙ্গামাটিতে পর্যটক সমাগত বেশ ভালো লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমাদের প্রায় ৬০-৮০ শতাংশ আবাসিক কক্ষগুলো বুকিং রয়েছে।
পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু কাপ্তাই হ্রদে নৌ-ভ্রমণ। তাই বেশিরভাগ পর্যটক সকাল থেকে ট্যুরিস্ট বোট ভাড়া করে বেরিয়ে পড়ছেন কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমণে। শহীদ মিনার পর্যটন অবতরণ সহায়ক ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ছোট-বড় অনেকগুরো ট্যুরিস্ট বোট রয়েছে। পর্যটকরা বোট নিয়ে সুবলং ঝর্ণা, কাপ্তাইয়ের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন।