র্যাব সরকারের বক্তব্যে রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব। আজ রোববার এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিবৃতিতে গত বৃহস্পতিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনের কথা বলা হয়। প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘র্যাব সৃষ্টি করেছে কে? র্যাব সৃষ্টি তো হয়েছে আমেরিকার পরামর্শে, আমেরিকাই তাদের ট্রেনিং দেয়, অস্ত্রশস্ত্র, হেলিকপ্টার এমনকি তাদের ডিজিটাল সিস্টেম, আইসিটি সিস্টেম সবই আমেরিকার দেওয়া।’
বিবৃতিতে আ স ম আবদুর রব বলেন, স্বাধীন সার্বভৌম একটি দেশের এলিট ফোর্স অন্য দেশের পরিকল্পনায় পরিচালিত হতে পারে না। এটা খুবই বিব্রতকর এবং অমর্যাদাকর, এতে রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব ক্ষুণ্ন হয়। র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞার বিপর্যয়কে সরকার কূটনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে না পেরে যুক্তরাষ্ট্রকে ভর্ৎসনা করার মতো অকূটনীতিসূলভ আচরণ করেছে। র্যাবের কার্যক্রমের সব দায় যুক্তরাষ্ট্রের উপর চাপিয়ে দিয়ে সরকার নিজের দায়মুক্তির পথ খুঁজতে চাচ্ছে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র যদি নিজ স্বার্থে রাষ্ট্রীয় বাহিনী বা প্রতিষ্ঠান এবং কাঠামোর উপর আইনি নির্দেশ বা সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন করতে না পারে, তাহলে রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব নস্যাৎ হয়ে যায়, পরিশেষে রাষ্ট্র ধ্বংসের দিকে ধাবিত হয়। ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় আমাদের অস্তিত্বের স্বার্থেই এসব বিষয়ে অনেক বেশি সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
আ স ম রব বলেন, মনে রাখা উচিত, অপরাধমুক্ত সমাজ গঠনে র্যাব কোনো যৌক্তিক সমাধান নয়। মূলত যে আর্থসামাজিক কারণে যেসব অপরাধ ঘটছে, তা নিরসনে বিদ্যমান উপনিবেশিক শাসনব্যবস্থা অকার্যকর। স্বাধীন দেশের উপযোগী রাষ্ট্রকাঠামো প্রবর্তনই হচ্ছে এর সমাধান। র্যাব গঠনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের মূল সংকটকে উপেক্ষা করা হয়েছে মাত্র।
তাঁর মতে, শুধু তাই নয়, র্যাব আজ মানবাধিকার লংঘনের দায়েও অভিযুক্ত। প্রচলিত নিপীড়নমূলক উপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তে স্বাধীন দেশের উপযোগী রাষ্ট্রকাঠামো প্রবর্তনের লক্ষ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের সকল পর্যায়ে শ্রম, কর্ম ও পেশার প্রতিনিধি সমন্বয়ে সমাজের সকল অংশীজনের অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন ব্যবস্থা বাস্তবায়নে দেশবাসীর প্রতি গণজাগরণ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।