‘সবকিছু পুতিনের জটিল হিসাব–নিকাশেরই অংশ’

মত ও পথ ডেস্ক

রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শিকার হয়েছে রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর। ফাইল ছবি

ক্রিমিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার যোগাযোগের একমাত্র সেতু কার্চ ব্রিজে গত শনিবার (৯ আগস্ট) বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেখানে ইউক্রেনের স্পেশাল ফোর্সের সদস্যরা হামলা চালিয়েছেন বলে দাবি করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে রাশিয়া কীভাবে এ হামলার জবাব দেবে, তা নিয়ে চাপের মুখে ছিলেন পুতিন। এমন পরিস্থিতিতেই সোমবার (১০ আগস্ট) ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল মস্কো। সোমবারের হামলার পেছনে পুতিনের উদ্দেশ্য কী, তা নিয়ে লিখেছেন বিবিসির রাশিয়াবিষয়ক সম্পাদক ভিতালি শেভচেঙ্কো। লেখাটি মত ও পথের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

গত শনিবার রাশিয়ার জন্য ছিল চরম অপমানের। সেদিন ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে রাশিয়াকে যুক্ত করা কার্চ সেতুতে হামলা হয়। এতে সেতুটি আংশিক ধসে পড়ে। এরপর সোমবার ইউক্রেনের ওপর ক্ষেপণাস্ত্রের স্রোত বইয়ে দিয়েছে মস্কো।

universel cardiac hospital

সেতুতে বিস্ফোরণ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য আরও বেশি অপমানের। কারণ, শুক্রবার তাঁর ৭০তম জন্মদিনের পরদিনই এ ঘটনা ঘটে। তাই এর জবাব দিতে তিনি বেশ চাপের মধ্যে ছিলেন। জবাব না দিলে তাঁর দুর্বলতা প্রকাশ পাবে, এটাও চাচ্ছিলেন না।

সোমবার ইউক্রেনের প্রধান শহরগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। এতে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার পুরো চিত্র এখনো পাওয়া যায়নি। কতজনের মৃত্যু হয়েছে, তা–ও স্পষ্ট নয়। তবে এটুকু অন্তত বোঝা যাচ্ছে যে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত ইউক্রেনের জন্য বিপর্যয়কর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে রুশ বাহিনী পিছু হটছে। এতে রাশিয়ার কট্টরপন্থীদের চরম অসন্তোষ ও চাপের মুখে পড়েছেন পুতিন। যুদ্ধের ময়দানে তেমন অগ্রগতি দেখাতে না পেরে এখন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে ইউক্রেনীয়দের প্রতিরোধের জবাব দিতে চাচ্ছেন তিনি।

এ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো উৎক্ষেপণ করা তুলনামূলক সহজ, তবে সেগুলো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগে থামিয়ে দেওয়া অত্যন্ত কঠিন। তাই হামলার সবচেয়ে সহজ এ পথই বেছে নিয়েছেন পুতিন। হামলার এ পদ্ধতি ব্যাপক নজর কাড়তেও সক্ষম হয়েছে।

রাশিয়ার টেলিভিশন চ্যানেলগুলো এ হামলার প্রভাব ফলাও করে প্রকাশ করছে। তাদের ভাষ্য অনেকটা এমন, ‘সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণেই আছে। প্রভাব–প্রতিপত্তির দিক দিয়ে আমরাই এখনো শীর্ষে। আমরা কী করতে পারি, তা এ হামলার মাধ্যমে দেখানো হয়েছে।’

হামলার পর জানা গেছে, ইউক্রেনের অনেক অঞ্চল বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে যত দিন গড়াচ্ছে, ইউক্রেনে ঠাণ্ডাও বাড়ছে। এমন পরিস্থিতে এ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্নতা ও যোগাযোগের সমস্যা সাধারণ ইউক্রেনীয়দের মনোবলের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। তাই মনে হচ্ছে, সবকিছু পুতিনের জটিল হিসাব–নিকাশেরই অংশ।

শেয়ার করুন