তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি তিনমাস হাঁকডাক করে মহাসমাবেশ নাম দিয়ে একটি ফ্লপ সমাবেশ করেছে। সাধারণ মানুষের কোনো সম্পৃক্ততা তাদের সমাবেশে ছিল না।
তিনি বলেন, সারাদেশ থেকে সন্ত্রাসীদের চট্টগ্রামে এনে হোটেল ভাড়া করে রেখেছে। পরদিন তাদের নিয়ে মহাসমাবেশ করেছে। চট্টগ্রামে জব্বারের বলিখেলায় এর চেয়েও বেশি মানুষ হয়।
শনিবার (১৫ অক্টোবর) বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ এবং বিভিন্ন আসনের সংসদ সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন মন্ত্রী। পরে ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি চট্টগ্রামে একটি সমাবেশ করেছে। ওই সমাবেশ থেকে তারা নানান ধরনের আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গা থেকে সন্ত্রাসীদের নিয়ে এসে মহাসমাবেশ ঘটিয়েছে। সেখান থেকে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির ছক এঁকেছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণকে নিয়ে রাজনীতি করে। আমরা জনগণকে নিয়েই চট্টগ্রামের সব উপজেলা ও থানায় আগামী মাসে গণসমাবেশ ও মিছিল করবো। তারপর চট্টগ্রাম শহরে জেলা সমাবেশ করবো। তখন আপনারা দেখবেন ইনশাল্লাহ আমাদের জেলা সমাবেশ কেমন হয়। সেই প্রেক্ষাপটে আমরা রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আমাদের করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করার জন্য আজ আমরা বসেছি।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন বিএনপি চট্টগ্রামের সমাবেশের জন্য তিনমাস ধরে প্রস্তুতি নিয়েছে। তারা বলেছিলেন, ১৫ লাখ মানুষের সমাগম হবে। এখান থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ১৮০ কিলোমিটার, টেকনাফের দূরত্ব ২৫০ কিলোমিটার, সেখান থেকেও মানুষ এনেছেন। তারা পলোগ্রাউন্ড মাঠের ৪০ শতাংশ পেছনে রেখে মঞ্চ করেছেন। আর সামনের যে অংশ তার অর্ধেকও পূর্ণ হয়নি। অর্থাৎ পলোগ্রাউন্ড মাঠের এক-তৃতীয়াংশও ঠিকমতো পূর্ণ হয়নি।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, জিয়াউর রহমান ইতিহাসের পাতায় একজন খুনি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবেন। তিনি নাস্তা করতে করতে ফাঁসির আদেশে সই করতেন। এমন ঘটনাও ঘটেছে, ফাঁসি কার্যকর হয়ে গেছে, রায় হয়েছে ফাঁসির পর। তারা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন। যারা সেই নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের শিকাররা সরব হয়েছেন। আমরা সেগুলোকে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যাবো।
আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি গত ১৪ বছর ধরেই এই আন্দোলনের মধ্যে আছে। আমরা সরকার গঠনের দু-একমাস পর থেকেই তারা সরকারকে বিদায় দেওয়ার আন্দোলনের মধ্যে আছেন। আন্দোলন করতে করতে দেখা গেলো তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন। তাদের আন্দোলনের মধ্যেই জনগণ পরপর তিনবার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব আমাদের দিয়েছে। তাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আগামী নির্বাচনে আমাদের ভোট আরও বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি সন্ত্রাস নৈরাজ্যের পথেই হাঁটছে। তারা সংঘাত চাই। তারা সংঘাতের পথে হাঁটলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর জবাব দেওয়া হবে। বিএনপি যাতে কোনো সংঘাত সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, সংসদ সদস্য মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, মাহফুজুর রহমান মিতা, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী, দিদারুল আলম, খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, উত্তর জেলার সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমুখ।