উখিয়ার লম্বাশিয়া আশ্রয়শিবিরের ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’ (এআরএসপিএইচ) কার্যালয়ে সাধারণ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ। এ সময় অস্ত্রধারী একদল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ওই কার্যালয়ে ঢুকে মুহিবুল্লাহর বুকে পরপর চারটি গুলি করে। গুলি লাগতেই মুহিবুল্লাহ মাটিতে ঢলে পড়েন। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পক্ষে জনমত গঠনে কাজ করায় তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবদুল্লাহ আল মামুনের আদালতে মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলার সাক্ষ্য দিতে এসে এসব কথা বলেন মামলার সাক্ষী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হামিদ মাঝি। তিনি লম্বাশিয়া আশ্রয়শিবিরের একটি ব্লকের ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতা (মাঝি) ছিলেন।
হামিদের সাক্ষ্য গ্রহণ করার পর মামলার আরেক সাক্ষী রোহিঙ্গা নেতা নুর আলমের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। তিনিও মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তুলে ধরে বলেন, মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গাদের প্রিয় নেতা ছিলেন। বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্মভূমিতে (রাখাইন) ফেরাতে ভূমিকা রাখেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করে আলোচনায় আসেন তিনি। এ জন্য প্রত্যাবাসন বিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী চারটি গুলি করে মুহিবুল্লাহকে হত্যা করে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও সরকারি কৌঁসুলি ফরিদুল আলম বলেন, আজ বেলা দুইটা পর্যন্ত মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলার দুজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। তারা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। মুহিবুল্লাহকে চারটি গুলি করে হত্যার বর্ণনা আদালতে তুলে ধরেন তারা। সাক্ষ্য শেষে দুজনকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল মান্নান। এর আগে সকালে কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে মামলার ১৪ আসামিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আনা হয়।
২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার লম্বাশিয়া আশ্রয়শিবিরের ডি ব্লকে এআরএসপিএইচ কার্যালয়ে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন মুহিবুল্লাহ। তিনি ওই সংগঠনের চেয়ারম্যান ছিলেন। এ ঘটনায় মুহিবুল্লাহর ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন।