বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপের কোনো আগ্রহ চীনের নেই জানিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, ‘বাংলাদেশ কেন, কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে চীন কখনো হস্তক্ষেপ করতে চায়নি।’ তবে রাষ্ট্রদূত মনে করেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক-সামাজিক স্থিতিশীলতার এই ধারা অব্যাহত রাখাটা জরুরি।
চীনের শাসক দল কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম কংগ্রেস নিয়ে শনিবার (৫ নভেম্বর) ঢাকায় বাংলাদেশ-চায়না সিল্ক রোড ফোরামের এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে চীনা রাষ্ট্রদূত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তাদের দেশের অবস্থান সম্পর্কে বলেন, ‘চীন কোনো যুদ্ধ চায় না। বর্তমান ক্রাইসিসের ক্ষেত্রেও দ্রুত সুষ্ঠু সমাধান চায়। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, কোনো কোনো রাষ্ট্র আবার এর সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখছে না। জ্বালানি সংক্রান্ত নানা পদক্ষেপ দেখে সেটা বোঝা যায়।’
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘কেবল ইউক্রেন, রাশিয়া, ইউরোপের মানুষ না- এই পরিস্থিতিতে পুরো বিশ্বের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। মূল্যস্ফীতির প্রভাব পড়ছে সবার ওপর।পশ্চিমারা ভাবে মডার্নাইজেশন হলো পশ্চিমা মডার্নাইজেশন। কিন্তু বিষয়টা তা না। এটা সার্বিক।’
গত মাসে অনুষ্ঠিত চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম কংগ্রেসে টানা তৃতীয় বারের মতো দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন শি জিনপিং। এ প্রসঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘নতুন এক যাত্রা শুরু করতে চীনের সব জাতিগোষ্ঠীর মানুষকে নিয়ে মডার্ন সোশালিস্ট রাষ্ট্র গঠনে ভূমিকা রাখবে এই কংগ্রেস।’
বৈশ্বিক অর্থনীতিতে চীনের অবদান ‘এককভাবে বৃহৎ’ দাবি করে লি জিমিং বলেন, ‘চীন-বাংলাদেশ কৌশলগত সম্পর্ক এই কংগ্রেসের মাধ্যমে আরও দৃঢ় হবে। দুদেশের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে এই কংগ্রেস।’
এ সময় রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়েও কথা বলেন চীনা রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীন মিয়ানমারকে চাপ দিচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান না হলে আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে। একইসঙ্গে আবার ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্ষতির কথা চিন্তা করে অনেকেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চায় না।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের জোট শরিক দুই বাম দলের নেতা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া।