‘দেশে কেউ সুষ্ঠু রাজনীতি করতে চাইলে সরকারের আপত্তি নেই’ বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, সাধারণ মানুষের গায়ে হাত দিলে তাদের রক্ষা নেই। এটা সহ্য করা যায় না। কোনো মানুষ সহ্য করতে পারবে না। রাজধানীর জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের আয়োজিত ‘অগ্নি সন্ত্রাসের আর্তনাদ: বিএনপি-জামাতের অগ্নি সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের খণ্ডচিত্র’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ভবিষ্যতে অগ্নিসন্ত্রাসের মতো ঘটনা যেন না ঘটে, এ জন্য দেশবাসীকে সজাগ থাকার অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী। যারা ধ্বংসাত্মক কাজ করতে পারেন ও কষ্ট দিতে পারেন তাদের পাশে মানুষ কীভাবে দাঁড়া, সেই প্রশ্ন করেন তিনি। বলেন, ‘আমি জানি না, মানুষ আবার এদের পাশে কীভাবে দাঁড়ায়? কীভাবে সমর্থন করে?’ দেশে বিশৃঙ্খলা চান না জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই। দেশের উন্নতি ও মানুষের কল্যাণ চাই।’
সরকার উৎখাতের নামে ২০১৩, ‘১৪ ও ‘১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাস হয়েছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, গাড়িতে যাচ্ছে জীবন্ত মানুষগুলো, সেখানে আগুন ধরিয়ে মানুষকে হত্যা করা। এটাই নাকি আন্দোলন! এই আন্দোলন তো আমরা কখনো দেখিনি। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে মানুষকে নিয়ে আন্দোলন করতে হয়। ২০১৩ সালে আন্দোলনের নামে বিএনপি মানুষ খুন করে। অন্তত পাঁচশত মানুষ আগুনে পুড়ে মারা গেছে তখন। সাড়ে তিন হাজার মানুষ আহত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার মানুষের পাশে দাঁড়াতে। চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করেছি। যে মানুষগুলো আপনজন হারিয়েছেন, তাদের ব্যথা, কষ্ট ও বেদনাতো দুর করা সম্ভব নয়’। অনুষ্ঠানের শুরুতে ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট কর্মসূচির নামে আগুন সন্ত্রাস করেছিল দাবি করে, সেসব ঘটনায় ভিডিওচিত্র তুলে ধরা হয়।
শেখ হাসিনা ওই সব ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ ব্যক্তি ও নিহতদের সঙ্গে কথা বলেন। অনেকে তাদের কষ্টকর কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় তাদের সমবেদনা জানান তিনি। অগ্নিসন্ত্রাসে নিহতদের পরিবারে পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি আহতের জন্য সাধ্যমতো কাজ করে যাবেন বলেও জানান শেখ হাসিনা।
সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন হতাহতদের পরিবারের সদস্য এবং পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে সামরিক আদালতে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বিমানবাহিনীর সদস্যের পরিবারের সদস্যরা। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা ছাড়াও বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।