১৬তম ওভারের শেষ বলে লং অন দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জেতালেন অধিনায়ক বাটলার। ভারতের ১৬৯ রানের লক্ষ্যকে উড়িয়ে দিলেন বাটলার-হেলস জুটি। দুজনের কাছে ১০ উইকেটের অসহায় আত্মসমার্পণ করল ভারত। সেমিফাইনালে এভাবে হারবেন- এমনটা হয়তো কখনো কল্পনাও করেননি রোহিত-কোহলিরা।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রান তাড়ায় হেলস-বাটলারের অবিচ্ছিন্ন ১৭০ রানের জুটি যে কোনো উইকেটে সর্বোচ্চ জুটি। এর আগের রেকর্ডটি ছিল ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের। গত বিশ্বকাপে ওপেনিং জুটিতে অবিচ্ছিন্ন ১৫২ রানে জুটি করেছিলেন বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান।
সেমিফাইনালের আগে বাটলারের বলা কথাই প্রমাণ হলো আজ। ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল চাননি তিনি। সেটা প্রমাণ করলেন তার সতীর্থরা। নিজেও সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাটলার। ৪৯ বলে ৮০ রান করে অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন তিনি। তার ওপেনিং পার্টনার অ্যালেক্স হেলস খেলেছেন ৪৭ বলে ৮৬ রানের হারা না মানা ইনিংস
এ ঝোড়ো ইনিংসের জন্য ম্যাচ সেরাও হয়েছেন হেলস। ইংল্যান্ডের জয়ে অ্যাডিলেডের একটি ধারা অব্যাহত থাকল। এ মাঠে টস হারা দল কখনো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি জিততে পারেনি। ১৩ নভেম্বর ফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়বে ইংল্যান্ড।
চার-ছক্কার ফোয়ারা ছুটাচ্ছিলেন বাটলার-হেলস জুটি। পুরো ম্যাচে কোনো সুযোগ পায়নি ভারত। তবে ইনিংসের ১৪তম ওভারের শেষ বলে একটা সুযোগ পেয়েছিল ভারত। চাপ ও হতাশায় সেই সুযোগটিও হাতছাড়া করেছেন সূর্যকুমার যাদব। ৬৬ রানের সময় জীবন পেয়েছেন বাটলার। ১৫ ওভার শেষে ইংলিশদের রান বিনা উইকেটে ১৫৬। সেই সঙ্গে হেলসকে নিয়ে দুজনের জুটি ১৫০ পেরোল।
সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন অধিনায়ক বাটলার। হেলসের ঝোড়ো ফিফটির পর নিজেও তুলে নেন ফিফটি। হার্দিক পান্ডিয়াকে ছক্কা মেরে ৫০ পূর্ণ করেন তিনি। ফিফটি করতে খেলেছেন ৩৬ বল।
দুর্দান্ত ছন্দে থাকা সূর্যকুমার ১০ বলে ১৪ রান করে আউট হন। একটি করে চার ও ছক্কা তোলেন তিনি। অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে ছিলেন বিরাট কোহলি। তিনি হার্ডিক পান্ডিয়ার সঙ্গে ৬১ রান যোগ করেন। ফিরে যাওয়ার আগে সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক ৪০ বলে ৫০ রান করেন।
শেষটায় দারুণ এক ঝড় দেখিয়েছেন হার্ডিক। ডানহাতি পেস অলরাউন্ডার খেলেছেন ৩৩ বলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৩ রানের ইনিংস। শেষ বলে হিট উইকেট হওয়ার আগে তিনি পাঁচটি ছক্কা ও চারটি চারের মার দেখান। এছাড়া ঋষভ পান্ত করেন ৬ রান।
মার্ক উডের জায়গায় ইংল্যান্ডের একাদশে ঢোকা ক্রিস জর্ডান ৪ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। স্যাম কারেন ৪ ওভারে ৪২ রান হজম করে উইকেট শূন্য থাকেন। লেগ স্পিনার আদিল রশিদ দারুণ বোলিং করেছেন। তিনি ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ২০ রান। নিয়েছেন একটি উইকেট। এছাড়া ক্রিস ওকস ৩ ওভারে ২৪ রান দিয়ে একটি উইকেট দখল করেন।
১৯৯২ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতে নামবে ইংল্যান্ড। ‘৯২-এর সেই বিশ্বকাপে পাকিস্তানের কাছে ২২ রানে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল ইংল্যান্ডের। ৩০ বছর পর সেই হারের প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগ এলো ইংলিশদের।