জামায়াত আমিরের ছেলে কীভাবে জঙ্গি সংগঠনে, খতিয়ে দেখছে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

যুদ্ধাপরাধের দায়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন হারানো জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানের ছেলে রাফাত সাদিক সাইফুল্লাহ কীভাবে জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত হলেন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, এমবিবিএস পাস করা রাফাত ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে গত বুধবার সিলেট থেকে রাফাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার জঙ্গি সম্পৃক্ততার পেছনে বাবার দলের কোনো নির্দেশনা ছিল কি না, তা জিজ্ঞাসাবাদ করে দেখা হবে।

আসাদুজ্জামান জানান, ১ নভেম্বর রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে নতুন জঙ্গি সংগঠনটির তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সিলেট থেকে ‘হিজরত’ (দেশত্যাগ বা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলে যাওয়া) করেছিলেন।

আসাদুজ্জামান বলেন, সম্প্রতি দেশে যতো যুবক কথিত হিজরত করেন, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সিলেটের। সর্বপ্রথম সিলেট থেকে ‘হিজরত’ শুরু হয়। দল বেঁধে তরুণ–যুবকদের ঘর ছাড়ার পেছনে মূল পরিকল্পনাকারী (মাস্টারমাইন্ড) ছিলেন রাফাত।

তিনি বলেন, রাফাতের নেতৃত্বেই ২০২১ সালের জুন মাসে ১১ যুবক সিলেট থেকে ‘হিজরত’ করেন। তখন তা বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছিল। তারা বান্দরবানে গিয়ে কোনো কারণে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় সাতদিন পর আবার সিলেটে ফিরে আসেন। কিন্তু তারা জঙ্গি তৎপরতা বন্ধ রাখেননি।

রাফাত সাদিকসহ এ জঙ্গি সংগঠনের লোকেরা জিহাদে উদ্বুদ্ধ বেশ কয়েক যুবককে বোমা বানানোর প্রশিক্ষণ দিয়েছেন বলে জানান সিটিটিসি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘প্রশিক্ষণ থেকে তারা কী সক্ষমতা অর্জনে করেছেন, তা–ও যাচাই করেছে। আমরা সেই বোমা বানানোর কারিগরকে শনাক্ত করেছি। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

রাফাতের সঙ্গে জামায়াত বা ইসলামী ছাত্রশিবিরের কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান বলেন, রাফাত একসময় শিবির করেছেন। তবে তিনি কী ধরনের নেতা ছিলেন, সেটা জানা যায়নি। বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে তার যে গোপন যোগাযোগ, তা খতিয়ে দেখছি।

নতুন জঙ্গি সংগঠনটির হামলা-নাশকতার লক্ষ্য রয়েছে কি না, সে প্রশ্নের জবাবে এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এ সংগঠনের আরেক মাস্টারমাইন্ড শামীন মাহফুজ, তার সহযোগী তমাল। তাদের গ্রেপ্তার করা গেলে এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানা যাবে।

শেয়ার করুন