পাবনার ঈশ্বরদীতে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ‘ফেরত’ না দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় জেলে যাওয়া ১২ কৃষকের পরিবার দুশ্চিন্তায় আছে। আর ঋণের দায়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া একই গ্রামের আরও ২৫ কৃষক গ্রেপ্তারের ভয়ে বাড়িছাড়া হয়েছেন। পরিবারগুলোর দাবি, কৃষকদের সবাই দরিদ্র। অনেকে ঋণের টাকা পরিশোধও করেছেন। এরপরও তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন কীভাবে আদালতে যাবে, স্বজনদের জামিন করাবে, বুঝতে পারছে না পরিবারগুলো।
আজ শনিবার সকালে সরেজমিনে ছলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারি গ্রামটিতে গিয়ে দেখা গেছে, বেশিরভাগ বাড়ি একচালা, দোচালা টিনের ঘর। গ্রামজুড়ে সবার মধ্যে চাপা আতঙ্ক। গ্রেপ্তারের ভয় যেন তাড়া করছে সবাইকে। নিজে থেকে কিছুই বলতে চাচ্ছেন না কেউ। অনেক কথার পর উত্তর মিলছে একটা।
গ্রেপ্তার কৃষকদের পরিবারে চলছে নীরবতা, অন্য বাড়িতে পুরুষেরা নেই। গ্রেপ্তারের ভয়ে বাড়ি ছেড়েছেন তারা।
গ্রেপ্তার কৃষকদের স্বজন ও গ্রামের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের গ্রামে ভাড়ইমারি উত্তর পাড়া সবজি চাষি নামের একটি সমিতি রয়েছে। এতে মোট সদস্যসংখ্যা ৩৭। ২০১৬ সালে সদস্যরা সমবায় ব্যাংক থেকে গ্রুপভিত্তিক একটি ঋণ নেন।
তাদের প্রতিজনের ঋণের পরিমাণ ছিল ১০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত। অনেকেই এ ঋণের টাকা পরিশোধ করেছেন। তবে অনেকের আবার ২ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বাকি আছে। সাতজন কৃষক টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। ফলে গ্রুপভিত্তিক ঋণের কারণে সবার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঋণ পরিশোধের রসিদ কোথায়, জানতে চাইলে কৃষকদের পরিবারের সদস্যরা সেটি দেখাতে পারেননি।
ভাড়ইমারি উত্তর পাড়া সবজি চাষি সমিতির সভাপতি ও ছলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য বিলকিস নাহার জানান, স্বল্প সুদে কৃষকদের ঋণ দেওয়ার কথায় তিনি কৃষকদের জন্য এ ঋণের ব্যবস্থা করেন। সমিতির নামে মোট ১৬ লাখ টাকা ঋণ বরাদ্দ হয়। পরে ব্যাংক তাদের জানায়, ১৫ শতাংশ সুদ দিতে হবে। এতো টাকা সুদের কথা শুনেই কৃষকেরা ক্ষিপ্ত হন। এরপরও তারা ১৩ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। এখন ব্যাংক আরও ১২ লাখ টাকা দাবি করছে।