মরক্কোর ইতিহাস, টাইব্রেকারে হেরে স্পেনের বিদায়

ক্রীড়া ডেস্ক

এ যেন টিকিটাকা বনাম দ্রুতগতির পাল্টা আক্রমণের লড়াই। তাতে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোল পায়নি কোনও দলই। মরক্কোর ডিফেন্সের সামনে মুখ থুবড়ে পড়েছে স্পেনের একের পর এক আক্রমণ। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানের হয়নি মীমাংসা। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।

বিশ্বকাপের আগে থেকেই শিষ্যদের এক হাজার করে পেনাল্টি মারতে বলে দিয়েছিলেন এনরিকে। সেই হোমওয়ার্কও কাজে লাগলো না এদিন। পেনাল্টিতে তিনটি শট নিয়ে একটি গোলও করতে পারেননি সাবারিয়া, সোলে ও বুস্কেটস। ফলে টাইব্রেকারে ৩-০ গোলে জিতে নিজেদের ইতিহাসের প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে মরক্কো। বিদায় ঘণ্টা বাজলো অন্যতম ফেভারিট স্পেনের।

অধারিতভাবেই ম্যাচের নায়ক মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো। টাইব্রেকারে দুটি শট সেভ করেছেন তিনি।

আজ মঙ্গলবার রাতে এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুতেই পেদ্রি মরক্কোর ডিফেন্ডারদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পাস দেব গাভিকে। তিনি বলটি নিয়ন্ত্রণ করে গোলে ঢোকানোর আগেই ক্লিয়ার করে দেয় মরক্কো। ১২ মিনিটে হাকিমির বড় সুযোগ ছিল! তিনি মরক্কোর হয়ে ফ্রি-কিক নেন। তবে ক্রসবারের উপর দিয়ে বের হয়ে যায়।

ম্যাচের ১৫ মিনিটে ডান দিক থেকে ক্রস বাড়ান নওসাইর মাজরাউই। তবে তা নিজের গ্লাভসে নেন স্পেনের গোলরক্ষক উনাই সিমন। ম্যাচের ২০ মিনিটে বাম দিক থেকে ক্রস বাড়ান আশরাফ হাকিমি। তবে তা ক্লিয়ার করে দেন আয়মেরিক লাপোর্টে।

ম্যাচের ২৬ মিনিটে সহজ সুযোগ পায় স্পেন। জর্ডি আলবার পাস থেকে বল পান মার্কো অসেনসিও। সেখান থেকে শট করে বল জড়ান সাইড নেটে। ম্যাচের ৩৩ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থাকে জোরালো শট করেন নওসাইর মাজরাউই। তবে তা অসাধারণ সেভে দলকে রক্ষা করেন উনাই সিমন।

এরপর স্পেন বেশ কিছু অ্যাটাক করলেও তা থেকে সুবিধা করতে পারেনি তারা। ম্যাচের ৪১ মিনিটে ফ্রি কিক পায় মরক্কো। ফ্রিকিক থেকে সুবিধা করতে না পারলেও সেখান থেকে সাজানো আক্রমণ করে মরক্কো। বাম দিক থেকে বাড়ানো বলে হেড করেন নায়েফ আগুয়ের্ড। তবে তা চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে।

ম্যাচের ৪৫ মিনিটে কর্ণার পায় স্পেন। তবে সেখান থেকে কাজে লাগাতে পারেনি স্পেন। এরপর আরও বেশ কিছু আক্রমণ করে স্পেন। তবে শেষ পর্যন্ত গোল না হলে গোলশূন্য থেকেই বিরতিতে যায় দুই দল।

দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণে ওঠার চেয়ে রক্ষণ সামলাতেই বেশি মনযোগী ছিল মরক্কো।

৫৫ মিনিটে অসেনসিও ফ্রি-কিক থেকে ওলমোকে পাস দেন। ওলমোর শট, কিন্তু গোল হল না। মরক্কোর গোলরক্ষক পাঞ্চ করে বলটি বের করেন। গোলের মুখ এখনও খুললো না। দ্বিতীয়ার্ধেও স্পেন সে ভাবে কিছু করে উঠতে পারছে না। টিকিটাকার জালেই আটকে স্পেন। তাদের খেলার কোনও গতিই নেই।

৬৩ মিনিটে দুই পরিবর্তন আনেন এনরিকে। গাভির জায়গায় নামেন সোলার। অসেনসিওর বদলে মোরাতা। এরপরই স্পেনের খেলায় বেশ গতি ফিরে। কিন্তু খুব একটা সুবিধা হচ্ছিল না মরক্কোর জমাট রক্ষণের সামনে।

ম্যাচের ৬৮ মিনিটে কর্নার পায় স্পেন। তবে তা কাজে লাগাতে পারেনি তারা। এরপর বল নিজেদের দখলে রেখে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করে স্পেন।

ম্যাচের ৭৯ মিনিটে সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি স্পেন। এরপর ম্যাচের ৮০ মিনিটে কর্নার পায় স্পেন। তবে সেখান থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয় তারা। ম্যাচের ৮৫ মিনিটে ডান দিক থেকে ক্রস বাড়ান আশরাফ হাকিমি। তবে তা থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয় মরক্কো।

ম্যাচের ৮৮ মিনিটে সুযোগ আসে স্পেনের সামনে। তবে নিকো উইলিয়ামসের নেওয়া শট আটকে দেন সোফিয়ান আমরাবাত। এরপর বেশ কিছু আক্রমণ করে দুদল। তবে শেষ পর্যন্ত গোল না হলে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচটি। সেখানে কোনও গোলের দেখে মেলেনি। ফলে পেনাল্টি শুটআউট মীমাংসা হয় খেলার। সেই স্নায়ুযুদ্ধে জিতে স্পেনকে বিদায় করে শেষ আটে উঠেছে মরক্কো।

শেয়ার করুন