জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের (জিএম কাদের) দায়িত্ব পালন নিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বাতিল করে বিচারিক আদালতের দেওয়া আদেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ফলে জিএম কাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।
একই সঙ্গে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে বলেছেন আপিল বিভাগ। আগামী ৯ জানুয়ারি এ বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানি শেষে বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এর আগে ৪ অক্টোবর দলে জিএম কাদের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করেন জাপা থেকে বহিষ্কৃত নেতা জিয়াউল হক মৃধা। এরপর জিএম কাদের যাতে জাপার বিষয়ে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে না পারেন সে বিষয়ে ৩০ অক্টোবর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত। পরে এ আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে জি এম কাদেরের করা আবেদন ১৬ নভেম্বর খারিজ করে দেন একই আদালত।
এ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে মিস আপিল করেন জিএম কাদের। জেলা জজ আবেদন শুনানির জন্য ৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। পরে শুনানির আদেশ এগিয়ে আনার জন্য আবেদন করলে ২৪ নভেম্বর জেলা জজ আদালত সেটিও খারিজ করে দেন। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন করেন জি এম কাদের।
পরে ২৯ নভেম্বর শুনানি শেষে হাইকোর্ট ৩০ অক্টোবরের নিষেধাজ্ঞার আদেশ ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করে রুল জারি করেন। এরপর জিয়াউল হক মৃধা হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন। ২০ নভেম্বর হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। একই সঙ্গে আবেদনটি নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় এটি আপিল বিভাগে শুনানি হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মাদ এরশাদ ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। এরপর হাইকোর্টে একটি রিট মামলা বিচারাধীন থাকার পরও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ওই বছরের ২৮ ডিসেম্বর কাউন্সিল করে নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা দেন জি এম কাদের।
এরপর ৫ মার্চ গাজীপুর মহানগর কমিটির উপদেষ্টা আতাউর রহমান সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুর শিকদার, মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক রফিকুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. মো. আজিজকে বহিষ্কার করেন। ১৪ সেপ্টেম্বর বাদী মশিউর রহমান রাঙ্গাকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করেন। অন্যদিকে ১৭ সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাকেও জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করেন।