গত সপ্তাহে হওয়া ভারি বৃষ্টিপাতের পর শতাব্দীর ভয়াবহ বন্যায় অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে শত শত মানুষকে বন্যাকবলিত এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, গত সপ্তাহে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার কিম্বারলি অঞ্চলে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় এলির প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়। এর পরই সেখানে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়, যাতে বহু রাস্তা-ঘাট, বাড়ি-ঘর পানিতে ডুবে যায়।
পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার জরুরি পরিষেবাবিষয়ক মন্ত্রী স্টিফেন ডৌসন বলেন, পরিস্থিতি চরম সংকটাপন্ন। কিছু এলাকায় যতদূর চোখ যাচ্ছে, ততদূরই শুধু পানি ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না। কিছু কিছু এলাকার প্রায় ৫০ কিলোমিটার জায়গা প্লাবিত হয়েছে।
‘কিম্বারলিতে শত বছরের মধ্যে এমন মারাত্মক বন্যা দেখা যায়নি। এমনকি, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসেও এটি সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা।’
রোববার (৮ জানুয়ারি) অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া ব্যুরো জানায়, ঘূর্ণিঝড় এলি দেশের উত্তর-পূর্ব দিকে সরে যাওয়ায় বৃষ্টির পরিমাণ কমেছে। তবে কিম্বারলির বন্যা পরিস্থিতি আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে।
বৈরী আবহাওয়া পরিস্থিতি ‘লা নিনা’র কারণে গত বছর অস্ট্রেলিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় কিছু অঞ্চলকে অন্তত চারটি বড় ধরনের বন্যা সংকট সহ্য করতে হয়েছে। লা লিনার প্রভাবে সাধারণত বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি পায় ও পরে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়।
এবারের বন্যায় পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার ফিটজরয় ক্রসিং শহরটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখানে প্রায় ১ হাজার ৩০০ জন মানুষ বসবাস করে। শহরটির রাস্তাঘাট বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সেখানে ত্রাণ সামগ্রী হেলিকপ্টারে করে পৌঁছানো হয়েছে।
কিম্বারলি শহর কর্তৃপক্ষ বলেছে, এ এলাকার প্রায় ৫০ শতাংশ বাসিন্দা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর। তাদের মধ্যে অন্তত ২৩৩ জনকে বন্যাকবলিত এলাকা থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংস্থা বলছে, চলতি বছর বিশ্বের আবহাওয়া চক্রে অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ্য করা গেছে। এর আগে টানা তিন বছর প্রশান্ত মহাসাগরে লা নিনার প্রভাব ছিল না।
সাধারণত এক-দুই বছর লা নিনা ওই অঞ্চলে অবস্থান করে। এর প্রভাবে প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝবরাবর তাপমাত্রা বেড়ে একটি উষ্ণ রেখা তৈরি হয়। আর বাতাস পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে বইতে থাকে।
সূত্র: রয়টার্স