তাইওয়ানের স্বাধীনতাপন্থীরা আগুন নিয়ে খেলছেন: চীন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুদ্ধবিমান
ফাইল ছবি

তাইওয়ানের স্বাধীনতার পক্ষে যাঁরা উসকানি দিচ্ছেন, তাঁরা আগুন নিয়ে খেলছেন বলে সতর্ক করেছে চীন। বুধবার বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে বিদেশি রাজনীতিবিদদের সতর্ক করে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। খবর আল–জাজিরার।

চীনের তাইওয়ানবিষয়ক অফিসের মুখপাত্র মা শিয়াওগুয়াং বলেন, বেইজিং নতুন বছরে সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছে। এ ছাড়া তাইওয়ানের স্বাধীনতার ষড়যন্ত্র রুখে দিতেও বদ্ধপরিকর।

universel cardiac hospital

মা শিয়াওগুয়াং বলেন, কয়েকটি দেশ চীনের বিরুদ্ধে তাইওয়ানের স্বাধীনতার জন্য যেভাবে সমর্থন দিচ্ছে, তাকে ইচ্ছাকৃত উসকানি হিসেবে দেখছে বেইজিং। তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে ভুল সংকেত পাঠানো বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান শিয়াওগুয়াং। তিনি তাদের তাইয়ান প্রশ্নে আগুন নিয়ে খেলা বন্ধ করতে বলেন।

তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে মনে করে চীন। তাই এর নিয়ন্ত্রণ নিতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ভাষ্যমতে, চীনের সঙ্গে তাইওয়ানের ‘একত্রীকরণ’ অবশ্যই বাস্তবায়ন করা হবে। এমনকি লক্ষ্য পূরণে সামরিক শক্তি খাটানোর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি তিনি। অন্যদিকে তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবেই দেখে। তাদের নিজস্ব সংবিধান ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা রয়েছেন। তাইওয়ানের বেশির ভাগ বাসিন্দা নিজেদের তাইওয়ানি হিসেবে পরিচয় দেন।

তাইওয়ান একটি দ্বীপ। চীনের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১০০ মাইল। এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক মিত্রদেশও রয়েছে। এই দেশগুলোকে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়।

চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস পত্রিকা তাইওয়ানবিষয়ক অফিসের হুঁশিয়ারির বিষয়টি নিয়ে টুইট করেছে। তাতে বলা হচ্ছে, তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্নকরণের চেষ্টা ব্যর্থ হবে। তাইওয়ানকে স্বাধীন করার কাজে যুক্ত থাকলে তাকে শাস্তির অপেক্ষায় থাকতে হবে।

সাম্প্রতিক সময়ে তাইওয়ানে মার্কিন উচ্চপদস্থ রাজনৈতিক নেতাদের আনাগোনা বেড়েছে। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফর ঘিরে তাইওয়ান ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। তাইওয়ান ঘিরে ব্যাপক সামরিক মহড়া শুরু করে চীন। একে আক্রমণ শুরুর আগের প্রস্তুতি হিসেবে দেখছে তাইপে।

গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে তাইওয়ানের আকাশসীমায় ৭১টি যুদ্ধবিমান ও জলসীমায় ৭টি যুদ্ধজাহাজ পাঠায় বেইজিং। ২০২২ সালের মধ্যে একে সবচেয়ে বড় মহড়া হিসেবে দেখা হয়। এদিকে চীনের হুমকি মোকাবিলায় প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জনগণকে আশ্বস্ত করতে এ সপ্তাহে সামরিক মহড়া শুরু করেছে তাইওয়ান। দ্বীপটির বিমানবাহিনীর লেফট্যানেন্ট কর্নেল ইয়ু বং-ইয়েং বলেন, ‘আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ও আকাশপথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’

তাইপে এমন এক সময়ে তাদের সামরিক মহড়া শুরু করছে, যখন জার্মানি ও লিথুয়ানিয়ার আইনপ্রণেতারা তাইওয়ান সফর শুরু করেছেন। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েন বলেছেন, জার্মানির আইনপ্রণেতাদের তাইওয়ান সফর দ্বীপটির প্রতি তাঁদের সমর্থনের বহিঃপ্রকাশ।

১০ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেওয়া বুন্ডেস্ট্যাগের প্রতিরক্ষা কমিটির চেয়ারপারসন মেরি-অ্যাগনেস স্ট্র্যাক-জিমারম্যান বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের বিষয়টি মাথায় রেখে তাইওয়ান সফর করছি আমরা। এ ঘটনা শুধু ইউরোপ বা জার্মানির জন্য নয়, পুরো বিশ্বের চোখ খুলে দিয়েছে। ইউক্রেনে কী ঘটেছে, আমরা তা দেখছি। এটি সারা দুনিয়ার ওপর প্রভাব ফেলেছে। এ কারণেই আমরা তাইওয়ান সফর করছি।

শেয়ার করুন