রাজধানীর গুলশানে দুই পক্ষের বিরোধের মধ্যে গুলি করে দুজনকে আহত করার ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি আবদুল ওয়াহিদ মিন্টুই ৪৬ গুলি চালিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। তার লাইসেন্স করা পিস্তলটিও জব্দ করা হয়েছে।
আজ রোববার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে গুলশান-১ নম্বর গোলচত্বরের কাছে গুলশান শপিং সেন্টারের নিচে গুলিবর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। আহত পথচারী আমিনুল ইসলাম ও ভ্যানচালক আবদুর রহিম মিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবদুল ওয়াহিদের সঙ্গে তার দুই সহযোগী আরিফ হোসেন (২৪) ও মনির আহমেদকে (৩৫) আটক করা হয়েছে। মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা দোকানমালিক হাবিবুর রহমান আলিম (৩৫) ও স্থানীয় দোকানি খলিল খানকে (১৮) আটক করেছে পুলিশ।
সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আরিফ হোসেন ওমানপ্রবাসী। তিনি গুলশানের আলফা জেনারেল স্টোরে এসে মুঠোফোন আর্থিক সেবা ব্যবহার করে একটি নম্বরে কয়েক ধাপে মোট ৭৫ হাজার টাকা পাঠান। টাকা নগদ পরিশোধ করতে না পারায় দোকানি হাবিবুর রহমান তাকে দোকানে আটকে রাখেন।
খবর পেয়ে আরিফকে ছাড়িয়ে নিতে তার ভগ্নিপতি মনির হোসেন ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবদুল ওয়াহিদ গুলশান-১–এ ঘটনাস্থলের পাশের একটি কফির দোকানে আসেন। একপর্যায়ে তাদের দুজনকেও আটকাতে যান দোকানি হাবিবুর ও তার পরিচিত দোকানিরা।
এ সময় নিজের পিস্তল থেকে গুলি করেন আবদুল ওয়াহিদ। এতে রাস্তায় থাকা একজন পথচারী ও একজন ভ্যানচালক গুলিবিদ্ধ হন।
গুলিবিদ্ধ আমিনুল ইসলাম একজন গাড়িচালক। তাকে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর ভ্যানচালক আবদুর রহিমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
স্থানীয় দোকানিদের বরাত দিয়ে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবদুল ওয়াহিদ ঘটনাস্থলে এসে আরিফকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। দোকানিরা তাকে বাধা দিলে তিনি পিস্তল বের করে ফাঁকা গুলি করেন। এ সময় কয়েকজন দোকানিকেও লক্ষ্য করে গুলি করতে উদ্ধত হন তিনি। একপর্যায়ে দোকানিরা তাকে ধাওয়া করেন। এ সময় তার ছোড়া গুলিতে দুজন আহত হন।
পুলিশ জানায়, পিস্তলটি স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবদুল ওয়াহিদের নামে লাইসেন্স করা। তিনি ২০১৬ সালে এই অস্ত্রের লাইসেন্স পান। মেয়াদ শেষে ২০২১ সালে আবারও লাইসেন্সটি নবায়ন করেন তিনি।
এ ঘটনায় ১টি পিস্তল, ১৬টি গুলি, ৩টি গুলির খোসা ও ৪টি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গুলশান থানায় গেলে পুলিশের কেউ কথা বলতে রাজি হননি। গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম বলেন, তিনি কোনো কথা বলতে পারবেন না। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে কথা বলবেন।