গণমাধ্যমসংক্রান্ত বিদ্যমান আইনগুলোর পাশাপাশি নতুন আরও পাঁচটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতো বেশি আইনের বেড়াজালে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হলে গণমাধ্যম ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করেন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)।
সংবাদপত্র মালিকদের এ সংগঠনের নেতারা মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ অভিমত তুলে ধরেন।
গণমাধ্যমসংক্রান্ত বিবেচনাধীন পাঁচটি আইনের খসড়ার ওপর নোয়াবের লিখিত মতামত ওবায়দুল কাদেরের কাছে দেওয়া হয়। এসব আইন চূড়ান্ত করার আগে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের আহ্বান জানান নোয়াবের নেতারা। তাঁরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ এ-সংক্রান্ত বিদ্যমান বিভিন্ন আইনকে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অন্তরায় বলে উল্লেখ করেন।
নোয়াবের সভাপতি ও টাইমস মিডিয়া লিমিটেডের এ কে আজাদের নেতৃত্বে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন নিউ এজ-এর এ এস এম শহীদুল্লাহ খান, প্রথম আলোর মতিউর রহমান, দ্য ডেইলি স্টার-এর মাহ্ফুজ আনাম, মানবজমিন-এর মতিউর রহমান চৌধুরী, ভোরের কাগজ-এর তারিক সুজাত, ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস-এর শামসুল হক জাহিদ ও বণিক বার্তার দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।
নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, সংবাদপত্র প্রকাশের ক্ষেত্রে দুটি বড় সংকট চলছে। কাগজের মূল্য দুই থেকে তিন গুণ বেড়ে গেছে। প্রকাশনা ব্যয়ও অনেক বেড়েছে। তার ওপর ভ্যাট-ট্যাক্স থাকায় সংবাদপত্রকে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।
প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, গণমাধ্যমসংক্রান্ত বিদ্যমান আইনগুলোর পাশাপাশি সরকার নতুন করে যে পাঁচটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে, সেগুলো গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপর নিবর্তনের মাত্রা আরও বাড়াবে।
দ্য ডেইলি স্টার-এর সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম বলেন, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আইন করা হয়। কিন্তু সেগুলো দিয়ে সরকার সত্যিই উপকৃত হয় কি না, ভেবে দেখতে হবে।
মানবজমিন-এর প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী সংবাদমাধ্যমের বিভিন্ন সংকট নিরসনে মন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন।
সবশেষে ওবায়দুল কাদের বলেন, গণমাধ্যমের কাছে আওয়ামী লীগ কোনো পক্ষপাতিত্ব চায় না। শতভাগ আওয়ামী লীগের রিপোর্ট দেওয়া হবে, সেটিও সঠিক হবে না। সেখানে বিরোধী দলের খবরও গুরুত্ব অনুযায়ী থাকবে। তবে আওয়ামী লীগ তার প্রাপ্যটুকু চায়। তিনি বলেন, ‘আমরা সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে বা প্রতিপক্ষ নই। আমরা পরস্পরের সহযোগী।’
বার্ষিক সাধারণ সভা:
মঙ্গলবার নোয়াবের বার্ষিক সাধারণ সভা সভাপতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদের সভাপতিত্বে সভায় ২০২২ সালের নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুমোদিত হয়। অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে দেশের সংবাদপত্রজগৎকে নিয়ে শিগগির একটি আলোচনা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।