ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য হতে আগ্রহী যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন আজ শুক্রবার কিয়েভে এই জোটের সঙ্গে বৈঠক বসেছে। তবে কী হবে, বৈঠক শেষ হওয়ার আগে কিছু বলা যাচ্ছে না। গত ৫০ বছরে কয়েক দফায় সদস্য সংখ্যা বাড়িয়েছে এই জোট। খবর এএফপির।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর ৪ মাস পর ২৭ সদস্যরাষ্ট্রের এই জোট দেশটির সদস্য হওয়ার আবেদন গ্রহণ করে। এ ছাড়া মলদোভার আবেদনও গ্রহণ করে। ইইউ জোটে সদস্য হওয়ার প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ এটি। এর মধ্যে পেরিয়ে গেছে কয়েক মাস। ইউক্রেন ইইউর সদস্যরাষ্ট্র হতে মরিয়া।
সম্মেলন সামনে রেখে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিগাল বলেছেন, ইউক্রেনে শীর্ষ পর্যায়ে এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হচ্ছে, ইইউর সদস্য হতে ইউক্রেনের দ্রুত নেওয়া পদক্ষেপের প্রতি ইউরোপের সমর্থন রয়েছে।
১৯৫৭ সালে ছয়টি রাষ্ট্র নিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল ইউরোপিয়ান ইকোনমিক কমিউনিটির। পরে নামকরণ করা হয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। শুরুতে ছিল বেলজিয়াম, ফ্রান্স, ইতালি, লুক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ডস ও পশ্চিম জার্মানি। ১৯৭৩ সালে এসে যোগ হয় যুক্তরাজ্য, ডেনমার্ক ও আয়ারল্যান্ড। এরপর আশির দশকে যুক্ত হয় গ্রিস, পর্তুগাল ও স্পেন।
১৯৯৫ সালের দিকে পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে এই জোট সম্প্রসারণে মনোযোগ দেয়। এর সদস্য করা হয় অস্ট্রিয়া, ফিনল্যান্ড ও সুইডেনকে। এর মধ্য দিয়ে এই জোট রাশিয়ার সীমান্তে পৌঁছায়।
২০০৪ সালে এর সদস্য সংখ্যা একলাফে বেড়ে ১৫টি থেকে ২৫টি হয়। নতুন ১০টি দেশের মধ্যে ৮টি ছিল পূর্ব ইউরোপীয় সাবেক কমিউনিস্ট দেশ এবং ২টি ভূমধ্যসাগরীয় দেশ। সবাই ইইউর পতাকাতলে চলে আসে। ২০০৭ সালে বুলগেরিয়া ও রোমানিয়া যোগ দিলে জোটের সদস্য হয় ২৭। আর ২৮তম সদস্যদেশ হিসেবে ২০১৩ সালে যোগ দেয় ক্রোয়েশিয়া।
২০১৬ সালে গণভোটে ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদের (ব্রেক্সিট) পক্ষে সে দেশের জনগণ ভোট দেয়। এরপর ২০২০ সালে প্রথম সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে জোট থেকে বেরিয়ে যায় যুক্তরাজ্য। ফলে সদস্যসংখ্যা কমে দাঁড়ায় ২৭-এ।
ইউক্রেন যুদ্ধ মধ্য ও পূর্ব ইউরোপে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আরও সম্প্রসারণ করার প্রয়োজনীয়তা বাড়িয়ে তুলেছে।
গত বছরের ২২ ডিসেম্বর পঞ্চম বলকান দেশ হিসেবে বসনিয়ার সদস্য হওয়ার আবেদন গ্রহণ করে ইইউ। এর আগে উত্তর মেসিডোনিয়া (২০০৫), মন্টিনিগ্রো (২০১০), সার্বিয়া (২০১২) ও আলবেনিয়া (২০১৪) আবেদন করে। কসোভো ও জর্জিয়া গত বছর আবেদন করলেও এখনো তাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
ন্যাটোর সদস্যরাষ্ট্র তুরস্ক ১৯৯৯ সালে ইইউর সদস্যপদ পেতে আবেদন গৃহীত হয়। এরপর ২০০৫ সাল থেকে দেশটির সদস্যপদ পাওয়ার বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়।