সিরাজগঞ্জের একটি এলাকায় গরু চুরিতে বাধা দেওয়ায় পিকআপ ভ্যানে চাপা দিয়ে গৃহবধূকে হত্যার ঘটনায় জড়িত এক ডাকাত দলের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল মঙ্গলবার গাজীপুর ও নাটোর থেকে এ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিবি বলছে, গত ৩১ জানুয়ারি ভোরে সিরাজগঞ্জ সদরে গৃহবধূ সেলিনা খাতুনকে চাপা দিয়ে পিকআপ রেখে পালিয়ে যান ডাকাত দলের সদস্যরা।
পিকআপ থেকে ‘আকাশ মুন্সি ভাই’ লেখা একটি কার্ড পাওয়া যায়। এ কার্ডের সূত্র ধরে ডাকাত দলটির সন্ধান পাওয়া যায়। ডাকাত দলটির সদস্যরা সংঘবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন জেলায় ডাকাতি করেন। আর্থিকভাবে সচ্ছল পরিবার তাদের লক্ষ্যবস্তু। এই চক্রের সদস্যরা মূলত প্রাইভেট কার অথবা পিকআপ ভ্যান নিয়ে বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতে ডাকাতি করেন।
এ কাজে কেউ বাধা দিলে তাদের ওপর হামলা করে পালিয়ে যান তারা। পরে অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের সদস্য ও পিকআপ ভ্যানের মালিক লিটন ফকির, তার দুই সহযোগী জিল্লুর রহমান ও মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। লিটন ও জিল্লুর ঘটনাস্থলে থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
ডিবি কর্মকর্তারা জানান, যে কার্ডটি পাওয়া যায় সেই কার্ডে ‘আকাশ মুন্সি ভাই’ লেখা ছিল। এই প্রতিষ্ঠান দেশের বিভিন্ন এলাকায় ট্রাক ও পিকআপ ভ্যান ভাড়া দিয়ে থাকে। তাদের নিজেদের কয়েকটি ট্রাক ও পিকআপ ভ্যান রয়েছে। পাশাপাশি নির্দিষ্ট কমিশনের বিনিময়ে ট্রাক ও পিকআপ ভ্যান ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাও করে তারা। গৃহবধূকে চাপা দেওয়া পিকআপটিও ওই ব্যানারে চলে।
উদ্ধার করা কার্ডটিতে উল্লিখিত ‘আকাশ মুন্সি ভাই’য়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এক ব্যক্তি বলেন, এই পিকআপ ভ্যানের মালিক অন্য একজন। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পিকআপটির আরও তিন দফা মালিকানা পরিবর্তিত হয়েছে। সর্বশেষ মালিক লিটন ফকির ডাকাতিতে এটি ব্যবহার করেন।
ডিবির মতিঝিল বিভাগের খিলগাঁও অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) শাহিদুর রহমান বলেন, পিকআপ ভ্যানের মালিক লিটন ফকিরের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তার বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ ৯টি মামলা রয়েছে। তদন্তে ঘটনাস্থলে লিটন ছিলেন, এমন তথ্য পাওয়া যায়। তাকেসহ তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর গৃহবধূ হত্যার রহস্যও উদ্ঘাটন করা সম্ভব হয়েছে।