নিত্যদিন সকাল থেকে রাজধানীজুড়ে সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। থাাকে রাত পর্যন্ত। বিশেষ করে কয়েকটি সড়কে যানজট বেশি। এসব সড়কে মোটরসাইকেল আরোহীদের চেয়ে বাসের যাত্রীদের ভোগান্তি বেশি হচ্ছে। যানজটের কারণে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন নগরবাসী। এসব সড়কে যানবাহন চলে থেমে থেমে। এতে পুরো ভাড়া দিয়েও তীব্র যানজটের কারণে অনেকে বাস থেকে নেমে হেঁটে রওনা দেন।
সড়ক ও যানবাহনের আধিক্য, ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা, জনঅচেতনতা ও আইন না মানা রাজধানীর মাত্রাতিরিক্ত যানজটের কারণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, যানজটের কারণে রাজধানীতে গাড়ির গতি মানুষের পায়ে হাঁটার গতির চেয়ে কম।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনের ‘দি ফিউচার প্ল্যানিং আরবান ট্রান্সপোর্টেশন ইন ঢাকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে বলা হয়, যানজটের কারণে রাজধানীতে একটি যান ঘণ্টায় গড়ে ৫ কিলোমিটার যেতে পারে। সাম্প্রতিক যানজটে ঘণ্টায় গাড়ির গতি আরো কমেছে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। ঢাকা শহরে সামান্য দূরত্বের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতেও মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ ও সময়ের অপচয় এখন অস্বাভাবিক মাত্রায় গিয়ে পৌঁছেছে।
গত বুধ ও বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, ঘুরছে না গাড়ির চাকা। যাত্রীদেরকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় একই জায়গায়। অফিসমুখী অনেক মানুষ যথাসময়ে পৌঁছতে পারেননি কর্মস্থলে। সব মিলিয়ে যানজটে নাকাল ছিলেন রাজধানীবাসী। সকাল থেকে মহাখালী থেকে বিমানবন্দর-উত্তরা হয়ে গাজীপুর পর্যন্ত এমন চিত্র দেখা যায়। বিকালের দিকেও এ জট কমেনি।
যানজটের পরিস্থিতি সামাল দিতে আন্তঃজেলা বাসগুলো মহাখালী থেকে ঘুরিয়ে দিতেও দেখা যায় ট্রাফিক পুলিশকে। বিশেষ করে মহাখালী থেকে বিমানবন্দর সড়ক ও উত্তরামুখী মানুষের কষ্টের অন্ত ছিল না।
একইদিন তীব্র যানজটের প্রভাব ছিল ফার্মগেট, শাহবাগ, মিরপুরের কালসী, তেজগাঁও, কাওরান বাজার, বনানী, মালিবাগ, বাড্ডা, কুড়িল বিশ্বরোড, নতুন বাজার, প্রেস ক্লাব, পল্টন, মতিঝিল, কমলাপুর, নিউমার্কেটসহ রাজধানীর অন্যান্য সড়কগুলোতেও। বাদ যায়নি পুরান ঢাকার রাস্তাগুলোও।
সরেজমিন দেখা যায়, যানজটের কারণে মানুষ রাস্তায় বের হয়ে তীব্র ভোগান্তিতে পড়েন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়িতে বসে থেকেও গন্তব্যে পৌঁছতে পারেননি অনেকে। বাধ্য হয়ে কেউ কেউ বাসায় ফিরে যান।
রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাসে উঠতে পারছিলেন না অনেকে। পায়ে হেঁটে বাসার উদ্দেশে রওয়ানা হন অনেকে।