১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো কর্তৃক ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা’ দিবস ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই বিশ্বের প্রায় ১৯২ দেশে এ দিবস পালিত হয়ে আসছে। বিশ্বের নানা প্রান্তে এ দিবসটিকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই কোনো শহীদ মিনার। ফলে এসব বিদ্যাপিঠের শিক্ষার্থীরা মাতৃভাষা দিবস সম্পর্কে অনুভূতি জানতে পারছে না।
এদিকে, বেশ কিছু বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে থাকে বলে জানা গেছে।
উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস জানায়, উপজেলার ৫৪ প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৬ উচ্চ বিদ্যালয়, সাত মাদরাসা, ৮৬ কিন্ডার গার্টেন ও তিন কলেজ মিলিয়ে আখাউড়া প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশেই কোনো শহীদ মিনার নেই। স্থায়ী শহীদ মিনার না থাকায় শিক্ষার্থীরাও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবসে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানাতে পারছে না। যদিও কিছু বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে থাকে।
তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতার প্রকৃতি ইতিহাস জানাতে দ্রুত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
আখাউড়ার দেবগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, ২০১৮ সালে বিদ্যালয়টি সরকারি হওয়ার পর ১০ তলা একটি ভবন, স্কুলের চারপাশে দেয়াল ও শহীদ মিনার নির্মাণের সুপারিশ মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা প্রতি বছরই আখাউড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে থাকে।
আখাউড়া উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান বলেন, আখাউড়ার ৫৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪২টি শহীদ মিনার আছে। ১২টি এখনও নির্মাণ করা হয়নি। তাছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণ করার জন্য আলাদা কোনো বাজেট নেই। প্রতিটা সরকারি বিদ্যালয়ে প্রতি অর্থ বছরে উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য সরকার কিছু অর্থ বরাদ্দ দেয়। সে টাকা থেকে বিভিন্ন সময়ে বিদ্যালেয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। বাকি বিদ্যালয়ে যেন শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয় সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমা বলেন, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকলেও যথাযোগ্য মর্যাদায় যেন শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত হয় সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া আছে। তবে শিক্ষা অফিসের সঙ্গে কথা বলবো যেন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের ব্যবস্থা করা হয়।