চিলির বিখ্যাত কবি পাবলো নেরুদার মৃত্যু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় পাঁচ দশক আগে। কিন্তু এতোদিনেও তাঁর মৃত্যু ঘিরে রহস্যের জট কাটেনি। এখন বলা হচ্ছে, বিষ খাওয়ানোর ফলে নেরুদার মৃত্যু হয়েছিল। বিদেশি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের বরাতে এমন অভিযোগ তুলেছেন নোবেলজয়ী এই সাহিত্যিকের এক স্বজন। খবর ইউএনবির।
নেরুদার স্বজন রুদলফ রেয়েস সংবাদমাধ্যমকে বলেন, কানাডা ও ডেনমার্কের পরীক্ষাগারে পরীক্ষা–নিরীক্ষার পর দেখা গেছে, শক্তিশালী বিষপ্রয়োগের ফলে নেরুদার স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, যা তার মৃত্যুকে তরান্বিত করেছিল। তবে এসব দেশের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি। আজ বুধবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হতে পারে।
১৯৭৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চিলিতে রক্তক্ষয়ী সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখল করেন অগাস্তো পিনোশে। ক্ষমতা হারিয়ে সেদিনই একে-৪৭ রাইফেলের গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন সালভাদর আয়েন্দে। ক্ষমতাচ্যুত ও নিহত প্রেসিডেন্ট আয়েন্দের প্রিয় বন্ধু ছিলেন নেরুদা। এর ঠিক ১২ দিন পর ২৩ সেপ্টেম্বর সান্তিয়াগোর সান্তা মারিয়া হাসপাতালে মারা যান বিগত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ এই কবি।
বিতর্ক শুরু হয় নেরুদার মৃত্যু নিয়ে। অভিযোগ ওঠে, বিষাক্ত ইনজেকশন প্রয়োগ করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তবে হাসপাতালের বুলেটিনে জানানো হয়, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে নেরুদার। তিনি প্রোস্টেট ক্যানসারে ভুগছিলেন।
প্রাণঘাতী ক্যানসার নাকি বিষপ্রয়োগ—এই বিরোধ শেষ পর্যন্ত আদালতে গড়ায়। মৃত্যুর ৪০ বছর পর আদালতের আদেশে ২০১৩ সালে ইস্লা নেগ্রায় সমাহিত পাবলো নেরুদার দেহাবশেষ উত্তোলন করা হয় এবং সেটি পরীক্ষার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয় যুক্তরাষ্ট্রে। বলা হয়, পাবলো নেরুদা প্রোস্টেট ক্যানসারে ভুগছিলেন ও ক্যানসার অনেকটা ছড়িয়ে পড়েছিল।
মৃত্যু যেভাবেই হোক, অগাস্তো পিনোশের অভ্যুত্থান, প্রিয় বন্ধু আয়েন্দের মৃত্যু, চিলির দুর্যোগ, রক্তপাত কবি নেরুদার মৃত্যুতে ভূমিকা রেখেছিল বলে মনে করেন তার ভক্ত–অনুরাগীরা।