রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ, বিনা টিকিটে ভ্রমণকারীদের নিকট হতে জরিমানাসহ ভাড়া আদায় সহজ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকিটিং ব্যবস্থায় তিনটি সেবা অন্তর্ভুক্ত করতে যাচ্ছে। যা আগামী ১ মার্চ হতে কার্যকর হবে। এরমধ্যে রয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইয়ের মাধ্যমে রেলওয়ের আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিটিং ব্যবস্থা, টিকিট চেকিং ব্যবস্থায় পস (পয়েন্ট অব সেলস) মেশিনের প্রবর্তন এবং অনলাইনের মাধ্যমে ক্রয়কৃত টিকিট অনলাইনে রিফান্ডের ব্যবস্থা করা।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রেলভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি। ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকিট ক্রয়ে এনআইডি ও জন্ম নিবন্ধন সনদ এবং পস ডিভাইস সংযোজন সংক্রান্ত এক সেমিনারের পর এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
রেলমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের সম্মানিত যাত্রী সাধারণের সেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ শীর্ষক স্লোগানকে সামনে রেখে ও বাংলাদেশ সরকারের লক্ষ্য অনুযায়ী ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকিটিং ব্যবস্থায় কিছু পরিবর্তন এনেছে।
নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট ক্রয়ের পূর্বে প্রত্যেক যাত্রীকে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর বা জন্মনিবন্ধন সনদ যাচাইপূর্বক রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক করেছে। কাউন্টার, অনলাইন ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট ক্রয়কারী যাত্রীরা অনলাইন অথবা মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে যে কোনো সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিটিং সিস্টেমে খুব সহজে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে পারবেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে এই ৭ শর্তাবলীর বিষয়ে জানানো হয়। সেগুলো হলো-
১। ১২-১৮ বছর বয়সী যাত্রীরা পিতা বা মাতার নাম ও এনআইডি দ্বারা নিবন্ধনকৃত রেলওয়ে অ্যাকাউন্ট অথবা জন্মনিবন্ধন নম্বর প্রদান ও জন্মনিবন্ধন সনদ আপলোড করার মাধ্যমে নিবন্ধনকৃত অ্যাকাউন্ট দ্বারা পৃথক/এককভাবে টিকিট ক্রয় করতে পারবেন। এরূপ ক্ষেত্রে টিকিটের ওপরে মুদ্রিত নামের সাথে যাত্রীর সম্পর্ক যাচাইয়ের জন্য ভ্রমণকালে বাধ্যতামূলকভাবে জন্মনিবন্ধন সনদের ফটোকপি সঙ্গে রাখতে হবে।
২। বিদেশি নাগরিকরা পাসপোর্ট নম্বর প্রদান ও পাসপোর্টের ছবি আপলোড করার মাধ্যমে নিবন্ধন সম্পন্ন করবেন।
৩। সফলভাবে এনআইডি/পাসপোর্ট/জন্মনিবন্ধন যাচাইপূর্বক নিবন্ধন ব্যতীত কোনো যাত্রী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে পারবেন না।
৪। ভ্রমণকালে যাত্রীকে অবশ্যই নিজস্ব এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি অথবা পাসপোর্ট/ছবি সম্বলিত আইডি কার্ড সাথে রাখতে হবে।
৫। পরিচয়পত্রের সাথে টিকিটের ওপরে মুদ্রিত যাত্রীর তথ্য না মিললে যাত্রীকে বিনা টিকিটে ভ্রমণের দায়ে অভিযুক্ত করা হবে এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৬। যাত্রীরা ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম নিবন্ধন/পাসপোর্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের সিস্টেমে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন।
৭। দেশের বিভাগীয় শহরের রেলস্টেশন ও আন্তঃনগর ট্রেনের প্রারম্ভিক স্টেশনসমূহে সর্বসাধারণের নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করার জন্য একটি করে হেল্পডেস্ক স্থাপন করা হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ন কবিরের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল আহসানসহ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।