গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারির রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের পর রাশিয়ার তেল আর কিনছে না জার্মানি। তারা এখন তেল নিচ্ছে বর্তমান মধ্য এশিয়া ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশ কাজাখস্তান থেকে। চলতি সপ্তাহেই দ্রুঝবা পাইপলাইন দিয়ে জার্মানিতে তেল পাঠিয়েছে কাজাখস্তান। কাজাখস্তান থেকে জার্মানি তেল কিনলেও লাভবান হচ্ছে ভ্লাদিমির পুতিনের রাশিয়া। খবর। ডয়েচে ভেলের।
কাজাখস্তান থেকে কেনা তেল যাচ্ছে পূর্ব জার্মানির একটি প্রধান তেল শোধনাগারে। এর আগে এ শোধনাগারে রাশিয়া থেকে আসা অপরিশোধিত তেল পরিশোধন করা হতো। কাজাখস্তান থেকে ২০ হাজার টন (১ লাখ ৪৫ হাজার ব্যারেল) তেল পৌঁছেছে জার্মানিতে। এভাবেই কাজাখস্তান থেকে তেল নিয়ে রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা করছে জার্মানি। কিন্তু বাস্তবে সেটা হচ্ছে কি?
রাশিয়া থেকে পাইপলাইনে তেল আনার ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো নিষেধাজ্ঞাও ছিল না। তা সত্ত্বেও জার্মানি সিদ্ধান্ত নেয়, তারা রাশিয়া থেকে তেল কিনবে না। কাজাখস্তান এ বছর জার্মানিকে ১২ লাখ টন তেল দেবে। কাজাখস্তান রাশিয়ার বন্ধু দেশ। তাদের পাইপলাইন অপারেটর কাজট্রান্সঅয়েল ইতিমধ্যেই আগামী তিন মাসে তিন লাখ টন তেল পাঠানোর জন্য রাশিয়ার সংস্থা ট্রানসনেফট-এর অনুমোদন পেয়ে গেছে।
কেন কাজাখস্তান থেকে তেল কিনছে জার্মানি? কাজাখস্তান থেকে তেল আসছে বার্লিনের ১২০ কিলোমিটার উত্তর–পূর্বের পিসিকে শোধনাগারে। শোধনাগারটি তুলনামূলকভাবে আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া এলাকায় এবং অনেক মানুষ এখানে কাজ করেন। বার্লিনের প্রয়োজনের ৯০ শতাংশ জ্বালানি এখান থেকে যায়। রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করে দেওয়ার পর এই শোধনাগারের অবস্থা শোচনীয় হয়ে যায়।
ইউক্রেন যুদ্ধের আগে জার্মানির এক-তৃতীয়াংশ তেল আসত রাশিয়া থেকে। ২০২১ সালের নভেম্বরে প্রতিদিন ৬ লাখ ৮৭ হাজার ব্যারেল তেল রাশিয়া থেকে এসেছে। যে শোধনাগারে রাশিয়া থেকে তেল আসত বা এখন কাজাখস্তান থেকে আসবে, তা পশ্চিম জার্মানির পাইপলাইনের সঙ্গে যুক্ত নয়। তাই এই শোধনাগার তার ক্ষমতার তুলনায় মাত্র ৬০ শতাংশ কাজ করতে পারছিল। কাজাখস্তানের তেল আসার পর এই শোধনাগার পুরো ক্ষমতা নিয়ে কাজ করতে পারবে এবং লাভজনকও হবে।