ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনে বাংলাদেশে জ্বালানি তেল (ডিজেল) আমদানি শুরু হয়েছে। ১৮ মার্চ (শনিবার) বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলায় স্থাপিত ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনে ডিজেল সরবরাহ উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী দিনে ভারত থেকে পাইপলাইনে বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুরে রিসিপ্ট টার্মিনালে ৯০ লাখ লিটার ডিজেল এসেছে।
এই পাইপলাইন চালু হওয়ায় অল্প সময়ে এবং স্বল্প ব্যয়ে নিরাপদে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় ডিজেল সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এতদিন ভারত থেকে রেল ট্যাংকারে ডিজেল আমদানি করা হতো।
ভারত-বাংলাদেশের সম্প্রীতি ও সহযোগিতার ঐতিহাসিক এ মুহূর্তটি স্মরণীয় করে রাখতে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে পাইপলাইনের রিসিপ্ট টার্মিনাল চত্বর থেকে শুরু করে শহরের বিভিন্ন রাস্তার দুই ধার ও মোড়ে মোড়ে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতিকৃতি দিয়ে বর্ণাঢ্য সাজে সজ্জিত করা হয়।
পার্বতীপুর উপজেলা পরিষদ হলরুমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। এ সময় উপস্থিত থেকে প্রজেক্টরে বড় পর্দায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপভোগ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপি, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পরিচালক (পরিচালনা ও পরিকল্পনা) খালিদ আহমেদ, বিপিসির পরিচালক (বিপণন) অনুপম বড়ুয়া, নুমালীগড় রিফাইনারির কান্ট্রি ম্যানেজার আর এম খঞ্জির, দিনাজপুর জেলা প্রশাসক খালেক মোহাম্মদ জাকী, পার্বতীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. হাফিজুল ইসলাম প্রামানিক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইসমাঈল, পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন, পার্বতীপুরের বিশিষ্ট জ্বালানি তেল ব্যবসায়ী মো. রজব আলী, বিপিসির পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) যথাক্রমে মো. মাসুদুর রহমান, আবু সালেহ ইকবাল ও গিয়াস উদ্দিন আনসারীসহ কর্মকর্তারা।
পরে সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপিসহ বিপিসির কর্মকর্তারা রিসিপ্ট টার্মিনালে উদ্বোধনী ফলক উম্মোচন করেন।
পূর্ব ভারতের আসাম রাজ্যের নুমালীগড় রিফাইনারি থেকে শিলিগুড়ি রেল টার্মিনাল পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার পাইপলাইনের সঙ্গে শিলিগুড়ি টার্মিনাল থেকে পার্বতীপুর পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ভারত অংশে ৫ কিলোমিটার ও বাংলাদেশ অংশে ১২৫ কিলোমিটার। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২০ কোটি টাকা। যার মধ্যে ভারত সরকার ৩০৩ কোটি রুপি ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন ২১৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। ১০ ইঞ্চি ব্যাসের এই পাইপ দিয়ে বছরে ১০ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল পরিবহন করা সম্ভব হবে।
২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পাইপলাইন নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
১৫ বছর মেয়াদি এই প্রকল্প ভারতের নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেড এবং বাংলাদেশের মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে।