ঈদের বাজারে দুই লাখ কোটি টাকার বাণিজ্যের আশা ব্যবসায়ীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাসের প্রকোপ না থাকায় প্রায় তিন বছর পর এবার প্রাণ খুলে ঈদ উৎসব উৎযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ। শবেবরাতের পর থেকে শুরু হয়েছে ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটা। ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে মার্কেট, শপিংমল, ফ্যাশন হাউস ও বিভিন্ন পণ্যের শোরুমগুলোতে। এর আগে আগামী ১৪ এপ্রিল বাঙালির সার্বজনীন উৎসব ‘পহেলা বৈশাখ’ বাংলা নববর্ষ উদযাপন হবে সারাদেশে।

একদিকে রোজার ঈদ, অন্যদিকে পহেলা বৈশাখের কেনাকাটা। মূলত এই দুই উৎসব ঘিরে অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্যে সুবাতাস বইছে। অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা ও বাজার সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এবারের ঈদ ও পহেলা বৈশাখে অন্তত ২ লাখ কোটি টাকার বাণিজ্য হবে। ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে ঈদের অর্থনীতি।

universel cardiac hospital

তাদের মতে, উৎসবকেন্দ্রিক এই বাণিজ্য দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে চাপে থাকা ব্যবসা-বাণিজ্যে আবার গতি ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উৎসবকেন্দ্রিক অর্থনীতির আকার কয়েক বছর ধরেই বাড়ছে। বিশেষ করে মানুষের আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জীবনমান উন্নত হচ্ছে। বাড়ছে তাদের ভোগ্যব্যয় ও কেনাকাটা। ফলে বাজার অর্থনীতির আকারও বড় হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-বোনাস, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স ও ব্যক্তিগত তহবিলের অর্থ ঈদের কেনাকাটায় সাধারণত ব্যবহার করা হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ ১৭ কোটি মানুষের এক বিশাল বাজার। অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণে নিজেদের উৎপাদিত পণ্যের পাশাপাশি বিদেশ থেকেও বিপুল পরিমাণ পণ্যসামগ্রী আমদানি করা হচ্ছে। ঈদের অর্থনীতিতে পোশাক, জুতা, ভোগ্যপণ্য ও ইলেক্ট্রনিক্সের মতো শীর্ষ ১০ পণ্যের কেনাকাটায় বাণিজ্য হবে দেড় লাখ কোটি টাকার ওপরে। এর বাইরে আরও অনেক রকম পণ্যের কেনাকাটা ও লেনদেন হবে ঈদকে ঘিরে। যার পরিমাণ হবে প্রায় আরও ৫০ হাজার কোটি টাকা।

ঈদের অর্থনীতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদ বলেন, ঈদকেন্দ্রিক বেচাবিক্রি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সবসময় গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঈদের কেনাকাটা করবেন। বৈশ্বিক সংকটের কারণে এবার সব ধরনের পণ্যের দাম একটু বাড়বে। তবে অর্থনীতিতে স্বস্তি ফিরে আসবে।

সাড়ে ১২ লাখ সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বোনাস। এক কোটি প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আরও প্রায় দেড় কোটি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বোনাস। এ পরিমাণ টাকার একটা বড় অংশ ঈদের অর্থনীতিতে যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

দোকান মালিক সমিতির তথ্যমতে, ঈদে সারাদেশের ২৫ লাখ দোকানে কেনাকাটা শুরু হবে। মুদি থেকে শুরু করে এসব দোকানের মধ্যে কাপড়ের দোকান, শোরুম ও ফ্যাশন হাউসগুলোও রয়েছে। এসব দোকানে বছরের অন্য সময় প্রতিদিন ৩ হাজার কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হলেও রোজার মাসে সেটি তিনগুণ বেড়ে হয় ৯ হাজার কোটি টাকা। ঈদুল ফিতরে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয় পোশাকের বাজারে।

শেয়ার করুন