ভক্ত ও সমর্থকদের মধ্যে সে অর্থে প্রাণচাঞ্চল্য নেই। নেই কোনো বাড়তি আবেগ-উত্তেজনাও। কেন থাকবে? সবাই ধরেই নিয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে ওযানডের মতো টি-টোয়েন্টিতেও পেরে উঠবে না আয়ারল্যান্ড।
বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের মতো আয়ারল্যান্ডকেও ‘ধবলধোলাই’ করবে সাকিবের দল। সেটাতো আর অকাশকুসুম বা অবাস্তব চিন্তা নয়।
ইংলিশদের ৩-০‘তে হারিয়ে ‘বাংলাওয়াশ’ করার পর শক্তি ও সামর্থ্যে বহুদূর পিছিয়ে থাকা আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ বিজয় এবং ধবলধোলাই করাই তো স্বাভাবিক।
কাজেই ধরা হচ্ছে আয়ারল্যান্ডকেও টি-টোয়েন্টিতে ‘বাংলাওয়াশ করবে সাকিবের দল। এখন সিরিজ যেহেতু ৩ ম্যাচের, তাই হোয়াইটওয়াশের আগে প্রথম কাজ হচ্ছে সিরিজ নিজেদের করে নেয়া। আজ ২৯ মার্চ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে জিতলেই সিরিজ নিশ্চিত হয়ে যাবে বাংলাদেশের। তখন ৩১ মার্চ শেষ ম্যাচটি হবে টাইগারদের পল স্টার্লিংয়ের আইরিশ বাহিনীকে বাংলাওয়াশ করার ম্যাচ।
আজ (বুধবার) জিততে পারলেই সিরিজ হাতের মুঠোয় চলে আসবে সাকিব বাহিনীর। সেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে ভাল খেলা শুরু। পারফরমেন্সের গ্রাফ ক্রমেই উঠছে ওপরের দিকে। তারপর আয়ারল্যান্ডের সাথে ওয়ানডে সিরিজে দোর্দণ্ড প্রতাপ দেখিয়ে একঝাঁক নতুন রেকর্ড গড়েছে টাইগাররা। ছাপিয়ে গেছে নিজেদের।
পরপর ২ ম্যাচে সর্বোচ্চ দলগত স্কোর এবং টি টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচেও সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর গড়ার জোর সম্ভাবনা তৈরি, গত ২৭ মার্চ চট্টগ্রামে প্রথম ম্যাচে বৃষ্টি বাঁধা না দিলে অর্থ্যাৎ, পুরো ২০ ওভার খেলা হলে হয়ত টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে নিজেদের ২১৫ রানের সর্বোচ্চ দলগত স্কোরও টপকে যেতে পারতো সাকিব বাহিনী।
সে ম্যাচে লিটন দাস আর রনি তালুকদার পাওয়ার প্লে‘র ৬ ওভারে ৮১ রান তুলেও নতুন রেকর্ড তৈরি করেন। ১০০ রান পূরণ হয় মাত্র ৮.৫ ওভারে।
ওপরের ছোট্ট পরিসখ্যানই বলে দিচ্ছে টি-টোয়েন্টির সব সময়ের আড়স্ট, জবুথবু বাংলাদেশের পালে নতুন হাওয়া লেগেছে। এখন ওয়ানডের মত টি-টোয়েন্টিতেও ভাল খেলতে শিখেছে টাইগাররা। ওপেনিং আর টপ অর্ডারে ছিল রাজ্যের সমস্যা, অস্বস্তি। লিটন দাস ও রনি তালুকদার বুকভরা সাহস ও নব উদ্যমে হাত খুলে খেলে তা কাটিয়ে দিয়েছেন।
তারপর সাকিব, তাওহিদ হৃদয়রা ইনিংসের চাকা সচল ও দ্রুত করতে পারেন। এর সঙ্গে পেস বোলিং ডিপার্টমেন্টটা হয়েছে আগের যে কোন সময়ের চেয়ে ধারালো। সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টিতে নতুন এক বাংলাদেশকেই দেখা যাচ্ছে।
তাসকিন নিজেকে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন। একজন ভালো মানের ফাস্টবোলারের যত রকম গুণাবলী দরকার, তার প্রায় সব রকম গুণই এখন তাসকিনের ভেতরে আছে। হাসান মাহমুদও উঠে আসছেন দ্রুত। মোস্তাফিজই বরং একটা পর্যায়ে এসে আটকে আছেন। না হয় বাংলাদেশের পেস বোলিং ডিপার্টমেন্টটা আরও সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময় হতো।
তারপরও আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে পেস বোলিং টিম বাংলাদেশের বড় শক্তি, সম্পদ ও অস্ত্র। আর স্পিন বোলিংতো আছেই। সে সাথে গ্রাউন্ড ফিল্ডিং ও ক্যাচিংয়েও উন্নতির ছাপ পরিষ্কার। এমন এক দলের সাথে আসলে আয়ারল্যান্ডের পেরে ওঠা কঠিন।
আইরিশরা এ সফরে যে মানের ক্রিকেট খেলেছেন, তা দিয়ে বাংলাদেশকে হরানো বা তাদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়া কঠিন। সাকিবের দল আত্মতুষ্টিতে ভুগলে কিংবা বাংলাদেশের খুব বাজে দিন গেলে ভিন্ন কথা। অন্যথায় আইরিশদের পেড়ে ওঠা খুব কঠিন।