সৌদি আরবে বাস দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি ওমরাহ হজ যাত্রী নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ জনে। দুর্ঘটনায় আহত ১৬ জন বাংলাদেশি দেশটির বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, দুর্ঘটনায় নিহতের কেউ অসচ্ছল হলে মৃতদেহ রাষ্ট্রীয় খরচে দেশে আনা হবে। এদিকে আহত-নিহতদের পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে শোকের মাতম চলছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো দুর্ঘটনার সবশেষ তথ্য জানিয়ে বলেছে, রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাস ও জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কর্মকর্তারা হাসপাতালে তাদের দেখভালের কাজ করছেন। মরদেহগুলো দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারেও সরকার কাজ করছে।
আজ বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন তাঁর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এ দুর্ঘটনায় নিহতের কেউ অসচ্ছল হলে মৃতদেহ রাষ্ট্রীয় খরচে দেশে আনা হবে।
গত সোমবার সৌদি আরবের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় আসির প্রদেশে ওমরাহ হজ যাত্রীবাহী বাসটি উল্টে গিয়ে তাতে আগুন ধরে যায়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন জানান, বাসটিতে থাকা ৪৭ যাত্রীর মধ্যে ৩৫ জনই বাংলাদেশি। ভিন্ন দেশি ১২ জন যাত্রীর মধ্যে ৫ জনকে মৃত এবং ৭ জনকে আহত অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে শনাক্ত করা হয়েছে।
এদিকে আহত-নিহত বাংলাদেশিদের পরিবারকে +৯৬৬৫৫৩০২৬৮১৪ ও +৯৬৬৫৩৮৬৪৩৫৩২ নম্বর দুটিতে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ওমরাহ হজ করতে যাওয়ার পথে সৌদি আরবে আকাবা শারে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৩ জনের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন—নোয়াখালীর সেনবাগের মো. শরিয়ত উল্লাহর ছেলে শহিদুল ইসলাম, কুমিল্লার মুরাদনগরের আব্দুল আওয়ালের ছেলে মামুন মিয়া, নোয়াখালীর মোহাম্মদ হেলাল, লক্ষ্মীপুরের সবুজ হোসাইন, কুমিল্লার মুরাদনগরের রাসেল মোল্লা, কক্সবাজারের মহেশখালীর মো. আসিফ, গাজীপুরের টঙ্গীর আব্দুল লতিফের ছেলে মো. ইমাম হোসাইন রনি, চাঁদপুরের কালু মিয়ার ছেলে রুক মিয়া, কক্সবাজারের মহেশখালীর সিফাত উল্লাহ, কুমিল্লার দেবীদ্বারের গিয়াস হামিদ, যশোরের কাওসার মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ নাজমুল, যশোর ইস্কান্দারের ছেলে রনি ও কক্সবাজারের মোহাম্মদ হোসেন।
জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট জানিয়েছে, বুধবার নতুন করে শনাক্ত ৫ বাংলাদেশি হলেন—খাইরুল ইসলাম, রুহুল আমিন, তুষার মজুমদার, মিরাজ হোসাইন ও সাকিব। তবে তাদের বিস্তারিত এখনো জানতে পারেনি দূতাবাস।
সৌদির বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৬ বাংলাদেশি হলেন, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের আবুল বাশারের ছেলে সালাহউদ্দিন, ভোলার আল আমিন, লক্ষ্মীপুরের রায়পুরার সিরাজুল্লাহর ছেলে মিনহাজ, চাঁদপুরের কচুয়ার মো. জয়নালের ছেলে জুয়েল, মাগুরার শালিখার জাকির মোল্লার ছেলের আফ্রিদি মোল্লা, লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জের আবু সাইদের ছেলের মো. রিয়াজ, কুমিল্লার লাকসামের আইয়ুব আলীর ছেলে দেলোয়ার হোসাইন, নোয়াখালীর সেনবাগের আব্দুল লতিফের ছেলে মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন, কুমিল্লার মুরাদনগরের আব্দুল মালেকের ছেলে ইয়ার হোসাইন ও মো. জজ মিয়ার ছেলে মো. জাহিদুল ইসলাম, মাগুরার মোহাম্মদপুরের ফজলুর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমান এবং যশোর সদরের কাজী আনোয়ার হোসাইনের ছেলে মো. মোশাররফ হোসাইন।
এর বাইরে রানা, মো. সেলিম, হোসাইন আলী ও কুদ্দুস নামে ৪ জন চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।