অনিরাপদ খাদ্যে হুমকিতে জনস্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়লেও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে এখনো অনেক পিছিয়ে। অথচ মন্ত্রণালয়সহ দেশে নিরাপদ খাদ্যসংশ্লিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নকারী সংস্থা রয়েছে ১৮টি। বাস্তবায়নকারী দপ্তর/অধিদপ্তর ১৮টি এবং স্থানীয় সরকার সংস্থা (সিটি করপোরেশনসহ) রয়েছে ৩৪২টি। এসব সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।

অনিরাপদ খাদ্যের কারণে দুই শতাধিক রোগের শিকার হচ্ছে মানুষ। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। অন্যদিকে কৃষিপণ্যের রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। দেশ বঞ্চিত হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা থেকে। জাতীয় নিরাপদ খাদ্য গবেষণাগারের গবেষণায় কৃষিপণ্যের মধ্যে ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম, সিসা ও আর্সেনিকের অস্তিত্ব মিলেছে।

ইউরোপীয় কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী, মানবদেহের জন্য ক্রোমিয়ামের সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রা ১ পিপিএম। আর গবেষণায়, চালে ক্রোমিয়াম পাওয়া গেছে ৩ দশমিক ৪১৪ পিপিএম পর্যন্ত। ক্যাডমিয়ামের সহনীয় মাত্রা শূন্য দশমিক ১ পিপিএম হলেও গবেষণায় মিলেছে ৩ দশমিক ২৩৯৫ পিপিএম পর্যন্ত। সিসার সহনীয় মাত্রা শূন্য দশমিক ২ পিপিএম। তবে গবেষণায় ১ দশমিক ৮৭ পিপিএম পর্যন্ত মিলেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চালে ক্যাডমিয়ামের প্রধান কারণ জমিতে নিম্নমানের টিএসপি সার প্রয়োগ এবং গার্মেন্টস শিল্প, ওষুধ কারখানা, টেক্সটাইল ও ট্যানারির অপরিশোধিত বর্জ্য।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম, সিসা ও আর্সেনিক মানুষের শরীরে ঢুকলে তা বের হতে পারে না। যা দীর্ঘ মেয়াদে কিডনি, লিভার ও মস্তিষ্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এছাড়া ক্যান্সারসহ নানা ধরনের ক্রনিক রোগের বড় উৎস হচ্ছে এসব রাসায়নিক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, অনিরাপদ খাদ্যের মাধ্যমে শরীরে দুই শতাধিক রোগ হতে পারে।

খাদ্য নিরাপত্তায় চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে স্মার্ট খাদ্য দরকার। সেজন্য স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি গড়ে তুলতে হবে- যা বেশ চ্যালেঞ্জিং, তবে অসম্ভব নয়। আগামী এক-দুই বছরের মধ্যে শতভাগ নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করবে সরকার।

শেয়ার করুন