সর্বকালের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ফিলিপাইন। তাইওয়ানকে ঘিরে দ্বীপ ভূখণ্ডটির চারপাশে বেইজিংয়ের বড় ধরনের সামরিক মহড়া শেষ করার একদিন পর যুক্তরাষ্ট্র ও ফিলিপাইন তাদের সর্বকালের বৃহত্তম এই যৌথ মহড়া শুরু করল।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সঙ্গে বৈঠক করে প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন তাইপেই ফিরে আসার পর শনিবার চীন মহড়া শুরু করে। তাইওয়ানকে অবরোধে চীনের সামরিক বাহিনী তিনদিনের এই মহড়া সোমবার শেষ হয়। আর এরপর মঙ্গলবার মহড়া শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও ফিলিপাইন।
ওয়াশিংটন অবশ্য চীনের এই সামরিক শক্তি প্রদর্শনকে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে সমালোচনা করেছে। এছাড়া চীনের এই কর্মকাণ্ডকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে সমালোচনা করেছেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই। তার দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে সফর করার অধিকার তার রয়েছে।
বিবিসি বলছে, ফিলিপাইনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এই সামরিক মহড়ার পরিকল্পনা আগেই করা হয়েছিল। ফিলিপিনো এবং মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, তাদের এই মহড়া ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতিকেই তুলে ধরছে। কারণ এই অঞ্চলটি অবাধ ও উন্মুক্ত।
ওয়াশিংটন গত মাসে ঘোষণা করে, ফিলিপাইনের সাথে তাদের বার্ষিক বালিকাটান সামরিক মহড়া হবে উভয় দেশের মধ্যে সর্বকালের সবচেয়ে বড়। এই মহড়ায় ১৭ হাজারেরও বেশি সৈন্য অংশগ্রহণ করবে। যার মধ্যে মার্কিন সেনার সংখ্যা ১২ হাজার।
দুই সপ্তাহের এই বালিকাটান মহড়ায় ফিলিপিনো এবং মার্কিন সামরিক বাহিনী দক্ষিণ চীন সাগরে একটি নকল লক্ষ্যবস্তু হিসেবে থাকা যুদ্ধজাহাজও উড়িয়ে দেবে। আর এই ধরনের কর্মকাণ্ড চীনের ক্রোধের কারণ হতে পারে।
এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ম্যানিলার সাথে একটি নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তি করে ওয়াশিংটন। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ জলসীমার কাছাকাছি অবস্থিত ফিলিপাইনের দ্বীপগুলোতে চারটি নতুন নৌ ঘাঁটি স্থাপন করা হবে।
এর মধ্যে তিনটি ঘাঁটি লুজন দ্বীপের উত্তরে স্থাপন করা হবে। আর এই অঞ্চলটি চীন ছাড়াও তাইওয়ানের নিকটতম এলাকা।
বিবিসি বলছে, ফিলিপাইনের চারপাশে ও দক্ষিণ চীন সাগরের জলপথে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান বাণিজ্য পথ রয়েছে এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই অঞ্চলটি চীনের বিতর্কিত দাবির বিষয় হয়ে উঠেছে।
অবশ্য এই অঞ্চলের এক ডজন দেশও বালিকাটান সামরিক মহড়ায় অংশ নেবে। এই মহড়া আগামী ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। মহড়ার জন্য অস্ট্রেলিয়া ১০০ সেনা পাঠিয়েছে বলেও জানিয়েছে বিবিসি।