‘যতদিন আওয়ামী লীগ থাকবে ততদিন পহেলা বৈশাখ উদযাপন করবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন ওবায়দুল কাদের

বাংলাদেশে যতদিন আওয়ামী লীগ থাকবে ততদিন পহেলা বৈশাখ উদযাপন করবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বাঙালির অতীত ইতিহাসের ঐতিহ্য যা কিছু আছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তার সঙ্গে এখনো যুক্ত আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। পহেলা বৈশাখের সঙ্গে সংঘাত যাদের তারা সাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করে। এই অশুভ অপশক্তি প্রতিহত করতে হবে।

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্কে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বাঙ্গালির জাতীয় সংস্কৃতির ঐতিহ্যের অংশ এই পহেলা বৈশাখ। বিলম্বে হলেও আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের জাতীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত দিন সেটা আজ স্বীকৃতি পাচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের জন্য, বাঙালিদের জন্য এটা সুখবর।

তিনি বলেন, করোনা মহামারির কারণে কয়েক বছর আমরা পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে পারিনি। পুরোনো ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করে আমরা আজ বাহাদুর শাহ পার্কে মঙ্গল শোভাযাত্রা করছি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই দিবসগুলো আমাদের অস্তিত্বের ঠিকানা। এই অনুষ্ঠান কে পালন করলো, আর কে করলো না- তা নিয়ে আমাদের তাকানোর সময় নেই।

তিনি বলেন, যে চেতনায় আমরা বিশ্বাস করি, যে চেতনা আমাদের ইতিহাসের অংশ, আমরা যা বিশ্বাস করি তা উদযাপন করবো। আজকের এই দিন আত্মপরিচয় অনুসন্ধানের দিন। অন্যদিকে এই দিনটি অসাম্প্রদায়িকতার মর্ম বাণী প্রচার করার দিন।

এবারের পহেলা বৈশাখ আমাদের জন্য শুভ বার্তা বয়ে এনেছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বহুদিন পর বাঙালির চিরচেনা পরিবেশ পহেলা বৈশাখ উদযাপন হচ্ছে। সারা বাংলায় নবজাগরণের ঢেউ জেগেছে। বাংলাদেশে আজ বাঙালি সংস্কৃতির উৎসবমুখর দিনটিকে আপামর বাঙালি তাদের হৃদয়ের যা ভালোবাসা, চেতনা সবকিছু উজাড় করে চিরচেনা পহেলা বৈশাখ উদযাপন করছে।

তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে, নববর্ষ হচ্ছে আমাদের দিন। আমাদের আসল আবেগের, হৃদয়ের, চেতনার, ইতিহাসের, ঐতিহ্যের, অস্তিত্বের ঠিকানা পহেলা বৈশাখ।

সেতুমন্ত্রী বলেন, এবার নতুন বার্তা নিয়ে এসেছে পহেলা বৈশাখ। আমাদের অর্থনৈতিক সংকট, বিশ্ব অর্থনীতির সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলার সংকট, জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি- এসব সমস্যায় যখন আক্রান্ত তখন পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হচ্ছে। এর পরে ঈদ। দুটি উৎসবে গ্রাম-শহরে বাণিজ্যিক লেনদেন, বেচাকেনার মাধ্যমে আমাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছি।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের অর্থনীতিতে যে সংগ্রাম চলছে, অর্থনীতিকে যে সম্ভাবনার রূপ দিচ্ছে, এই বাণিজ্যিক লেনদেন আমাদের অর্থনৈতিক সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিচ্ছে। এই দুই উৎসবে বাণিজ্যিক লেনদেন অর্থনৈতিক সংকটে প্রাণসঞ্চার করবে, নতুন ধারা যোগ করবে।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আমাদের বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িক এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনায় বিশ্বাসী। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করি তাদের প্রধান শত্রু হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা। আজ বিএনপির নেতৃত্বে সম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ বাংলাদেশে ডালপালা ছড়িয়েছে। আজকের দিনে শপথ নিতে হবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িকতার অশুভ বিষবৃক্ষ উৎপাটন করবো। এখানে কোনো আপস নেই। পহেলা বৈশাখের সঙ্গে যাদের সংঘাত তারা সাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করে। এই অশুভ অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে।

অনেকে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করে না, তাদের আদর্শ সাম্প্রদায়িকতার। তাদের চেতনা মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা, স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা। এইসব অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করবো, পরাজিত করবো। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে এগিয়ে যাবো, যোগ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

শেয়ার করুন