বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে আবার ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারে নিচে নামার দুই দিনের মধ্যে আবার তা বেড়ে ৩ হাজার ৩৬ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের বাজেট সহায়তা বাবদ ৫০ কোটি ৭০ লাখ ডলার ছাড় হওয়ায় বুধবার তা রিজার্ভে যোগ হয়েছে। যে কারণে রিজার্ভ কিছুটা বেড়েছে।
এর আগে সোমবার রিজার্ভ থেকে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের দেনা বাবদ ১১৮ কোটি ডলার পরিশোধের পর তা ২ হাজার ৯৮৩ কোটি ডলারে নেমে এসেছিল, যা ছিল গত সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
সূত্র জানায়, শর্ত বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিশ্বব্যাংক বাজেট সহায়তা বাবদ ৫০ কোটি ৭০ লাখ ডলার আটকে দিয়েছিল। মে মাসের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর ওয়াশিংটন সফরের সময় বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা অনুযায়ী ওই অর্থ ছাড় করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, জুলাইয়ের মধ্যে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক থেকে আরও কিছু বৈদেশিক ঋণ পাওয়া যাবে। এগুলো পেলে রিজার্ভ আরও কিছুটা বাড়বে। তবে আগামী জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে আবার আকুর বিল দেনা বাবদ শত কোটি ডলারের বেশি পরিশোধ করতে হবে। তখন রিজার্ভ আবারও চাপে পড়বে। এ ছাড়া স্বল্পমেয়াদি বৈদেশিক ঋণের যেসব কিস্তি আগে স্থগিত করা হয়েছিল সেগুলোও জুনের পর পরিশোধ করতে হবে। কেননা ওইসব ঋণ পরিশোধের মেয়াদ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ফলে ওইগুলো জুলাই থেকে পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া বিদ্যুৎসহ জ্বালানি তেল আমদানিতে এখন আরও বাড়তি ডলারের প্রয়োজন হবে।
সূত্র জানায়, ২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরু হলে রিজার্ভ বাড়তে থাকে। ওই সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ায় এবং আমদানি কমে যাওয়ায় রিজার্ভ বাড়ে। যে কারণে ২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ বেড়ে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৮০৬ কোটি ডলারে ওঠে। গত বছরের ফ্রেরুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে বিশ্ববাজারে জ্বালানিসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে যায়। এতে আমদানি খরচও বাড়ে। কিন্তু সেই তুলনায় বাড়েনি রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়। ফলে রিজার্ভ আবার কমতে থাকে।
আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) মতে, এখন রিজার্ভ ৩ হাজার ৩৬ কোটি ডলার হলেও তা থেকে বিভিন্ন তহবিলে বিনিয়োগ বাবদ ৫৫০ কোটি ডলার বাদ দিতে হবে। ফলে নিট রিজার্ভ আরও কম হবে।