অর্থনীতি সমিতি আগামী ২০২৩-‘২৪ অর্থবছরের জন্য ২০ লাখ ৯৪ হাজার ১১২ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট প্রস্তাব করেছে। সরকারের চলতি অর্থবছরের বাজেটের প্রাক্কলিত ব্যয়ের তুলনায় যা তিন গুণের বেশি। অন্যদিকে আগামী অর্থবছরের সম্ভাব্য বাজেটের তুলনায় প্রায় ২ দশমিক ৭ গুণ।
অর্থনীতি সমিতির প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১৯ লাখ ২৯ হাজার ১১২ কোটি টাকা। প্রত্যক্ষ করের ওপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি কালো টাকা উদ্ধার ও পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে ওই পরিমাণ রাজস্ব আদায় করা সম্ভব বলে মনে করছে সমিতি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইস্কাটনে অর্থনীতি সমিতি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত আগামী বাজেট নিয়ে প্রস্তাব তুলে ধরেন। তিনি ‘অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা ২০২৩-‘২৪ : বৈষম্য নিরসনে জনগণতান্ত্রিক বাজেট’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
আগামী ১০ বছরে ছয়টি লক্ষ্য অর্জনের জন্য এ বিকল্প বাজেট প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানান আবুল বারকাত। এগুলো হচ্ছে– ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষকে মধ্যবিত্ত শ্রেণিতে উন্নীত করা, বৈষম্য সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনা, ধনিক শ্রেণির সম্পদ দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে বণ্টন, উন্নয়নে দেশজ অর্থনীতিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব, মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক ও আলোকিত করার সুযোগ তৈরি ও মানুষের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।
অর্থনীতি সমিতির সভাপতি বলেন, সম্পদ কর আরোপ করে ২ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা আদায় করা সম্ভব। বৈষম্য কমাতে হলে সম্পদের ওপর কর ধার্য করতে হবে। নিম্ন আয়ের মানুষকে করের আয়তার বাইরে রাখতে হবে। বৈষম্য কমাতে ভ্যাটের মতো পরোক্ষ কর থেকে রাজস্ব না বাড়ানোরও প্রস্তাব করেন তিনি।
বাজেট প্রস্তাবনায় বলা হয়, গত ৫০ বছরে দেশে মোট পুঞ্জীভূত কালো টাকার পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ৩২ লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে মোট কালো টাকার মাত্র ২ শতাংশ উদ্ধার করতে পারলে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ সম্ভব। এ ছাড়া গত ৫০ বছরে মোট পুঞ্জীভূত অর্থ পাচারের পরিমাণ প্রায় ১১ লাখ ৯২ হাজার কোটি টাকা। পাচারের ৫ শতাংশ উদ্ধার করা হলে রাজস্ব আসবে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা।