খায়রুল কবিরের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পদবঞ্চিত নেতার দায় স্বীকার

নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদীতে কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের বাসভবন ও জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে ভাঙচুর-আগুন দেওয়ার দায় স্বীকার করেছেন জেলা ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া। বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিজের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ভবনটিতে ভাঙচুরের পর আগুন দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করেছেন তিনি।

এর আগে বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে ২০-২৫ জনের একদল দুর্বৃত্ত ওই ভবনে ঢুকে প্রতিটি কক্ষে ভাঙচুর চালায়। এ সময় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সব৫৯ কক্ষে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫টা ৪০ মিনিটে ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের তিতাস গ্যাসের আঞ্চলিক কার্যালয়ের পাশেই ভবনটির অবস্থান। খায়রুল কবিরের এই বাড়ি থেকেই জেলা বিএনপির সব ধরনের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বাড়িটি জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবেও পরিচিত।

জেলা ছাত্রদলের গত আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব মাইন উদ্দিন গত ২৬ জানুয়ারি জেলা ছাত্রদলের পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু তাকে এই পদ না দিয়ে সিনিয়র সহসভাপতি করায় তাকে সঠিক মূল্যায়ন করা হয়নি বলে মনে করেন তার কর্মী-সমর্থকেরা। এরপর থেকেই তার নেতৃত্বে কর্মী-সমর্থকেরা জেলা বিএনপিতে একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে চলেছেন। এসবের জের ধরেই গত বৃহস্পতিবার পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের মোটরসাইকেল শোভাযাত্রায় গুলিতে দুজন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।

মাইন উদ্দিন ভূঁইয়ার ভাষ্য, গত বৃহস্পতিবার পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের মোটরসাইকেল শোভাযাত্রায় গুলিতে ছাদিকুর রহমান নিহত হওয়ার ঘটনায় এখনো খায়রুল কবির গ্রেপ্তার না হওয়ায় আমাদের উত্তেজিত কর্মী-সমর্থকেরা তার বাড়িতে আগুন দিয়েছেন। আমাদের শতাধিক কর্মী-সমর্থক সেখানে গিয়েছিলেন, তবে বাড়িতে ঢুকেছেন ২০-২৫ জন। যতোদিন পর্যন্ত তিনি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার না হবেন, ততোদিন আমরা এই আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাব। আমরা চাই, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিন, খায়রুল কবিরকে আমরা নরসিংদীতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি। তারেক রহমানের কাছ থেকে ফয়সালা না পাওয়ার আগপর্যন্ত আমরা থামব না।

মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া আরও বলেন, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব থাকা অবস্থায় ৩১টি মামলা খেয়ে ও অন্তত ২০ বার জেল খেটেও পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক পদ পাইনি। অথচ কোনো অ্যাকটিভিটি নেই, বড় একজন নেতার ভাতিজা হওয়ায় একজন সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক পদ না দিয়ে আমাকে সিনিয়র সহসভাপতি করে অপমান করার বিষয়টি মানতে না পেরেই আমার সমর্থকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে একের পর এক আন্দোলন কর্মসূচি করে যাচ্ছেন।

শেয়ার করুন