মুসলিম লীগ সম্পূর্ণ ধর্মনিরপেক্ষ দল : রাহুল গান্ধী

মত ও পথ ডেস্ক

মুসলিম লীগকে ‘সম্পূর্ণ ধর্মনিরপেক্ষ দল’ বলে আখ্যায়িত করেছেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি ও দলটির অন্যতম শীর্ষস্থানীয় নেতা রাহুল গান্ধী। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এই দাবি করেন।

ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে শুক্রবার (২ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রাহুল গান্ধী। সেখানে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালায় মুসলিম লীগের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট সম্পর্কে তাকে প্রশ্ন করেন এক সাংবাদিক।

জবাবে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘মুসলিম লীগ সম্পূর্ণ ধর্মনিরপেক্ষ দল, তাদের সম্পর্কে ধর্মনিরপেক্ষহীনতার কিছু নেই। আমি মনে করি ওই ব্যক্তি (প্রতিবেদক) মুসলিম লীগ নিয়ে পড়াশোনা করেননি।’

বিজেপি-বিরোধী দলগুলোর ঐক্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার দল সব বিরোধী দলের সাথে নিয়মিত সংলাপ করছে। এতে ‘বেশ অনেক ভালো কাজ হচ্ছে’ বলেও জানান এই কংগ্রেস নেতা।

রাহুল গান্ধী বলেন, ‘বিরোধী দলগুলো বেশ ভালোভাবে ঐক্যবদ্ধ এবং দিনে দিকে তারা আরও বেশি করে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। আমরা সমস্ত বিরোধীদের (দলগুলোর সাথে) সংলাপ করছি। আমি মনে করি, এ বিষয়ে অনেক ভালো কাজ হচ্ছে।’

তার ভাষায়, ‘এটি একটি জটিল আলোচনা কারণ কিছু বিরোধী দলের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। তাই কিছুটা দেওয়া-নেওয়ার ভিত্তিতে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। কিন্তু আমি আত্মবিশ্বাসী, এটি (কেন্দ্রীয়ভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে একটি বিরোধী মহাজোট প্রতিষ্ঠা) করা সম্ভব হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রে চলমান এই সফরের সময় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম শীর্ষ এই নেতা সান ফ্রান্সিসকো, ওয়াশিংটন ডিসি এবং নিউইয়র্ক সফর করবেন।

এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে নরেন্দ্র মোদির সরকারের মতো তাদের অবস্থান একই বলে জানিয়েছেন রাহুল গান্ধী। এক প্রশ্নের জবাবে এই কংগ্রেস নেতা রাশিয়ার সাথে ভারতের দীর্ঘ কয়েক দশকের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের তাৎপর্যের ওপর জোর দেন।

রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে রাহুল বলেন, ‘বিজেপি যা করেছে আমি (রাশিয়াকে) একইভাবে প্রতিক্রিয়া জানাব। আমরা (কংগ্রেস) একইভাবে (রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের) প্রতিক্রিয়া দেবো। কারণ রাশিয়ার সাথে ভারতের সেই ধরনের সম্পর্ক রয়েছে এবং তা উপেক্ষা করা যাবে না। (রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে) আমাদের নীতিও একই রকম হবে।’

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হয়। রুশ এই আগ্রাসনের পর থেকে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে অভ্যন্তরীণভাবে এবং দেশের বাইরে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও লাখ লাখ মানুষ।

তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে ভারতের অবস্থান দেশটির কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বেশ সাংঘর্ষিক। ভারতের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির সরকার একদিকে যেন বলছে, কূটনীতি এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান করতে হবে।

অন্যদিকে পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আগ্রাসনের পর থেকে কম দামে রাশিয়ার তেল কেনাসহ মস্কোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বহুগুণে বাড়িয়েছে নয়াদিল্লি। পশ্চিমা দেশগুলো ভারতের এই ধরনের কর্মকাণ্ডে প্রায়ই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।

এমনকি ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন নিয়ে ভারতের অবস্থান নড়বড়ে বলে মন্তব্য করেছিলেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও।

শেয়ার করুন